শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের নামে চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ছয়
ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের সদস্য পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের একটি টিম। গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার দিবাগত রাত পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. ওয়ালিদ হোসেন এ তথ্য জানান।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, তুরাগ ও পল্টন থানা এলাকা থেকে বেল্লাল খান, রাকিব খান টিটুল, মো. আ. হান্নান, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. সোহাগ ও মো. খোরশেদ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সিমকার্ড ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।
ওয়ালিদ হোসেন আরো বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা মূলত তিনভাগে বিভক্ত হয়ে কাজ করত। তাদের প্রথম গ্রুপের সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের টেলিফোন গাইড, ডিরেক্টরি বই ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে নামিদামি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করত। এরপর টার্গেটকৃত নম্বরগুলো দ্বিতীয় গ্রুপের সদস্যদের কাছেপাঠানো হতো। এই গ্রুপের সদস্যরা টার্গেটকৃত মোবাইল ও টেলিফোন নম্বরে ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের সদস্য পরিচয় দিয়ে ফোন করত।’
‘দ্বিতীয় গ্রুপের লোকজন ফোন করে বলত, তাদের সংগঠনের কয়েকজন সদস্য জেলহাজতে আটক আছে। তাদের জামিন করাতে ও সংগঠন পরিচালনার জন্য বিপুল অর্থ প্রয়োজন। এই বলে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করত। তাদের দাবিকৃত চাঁদা পাঠানোর জন্য বিকাশ, নগদ রকেট অ্যাকাউন্ট পাঠানো হতো। টাকা না দিলে তাকেসহ তার পরিবারের সদস্যদের অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করত। ভুক্তভোগীরা তাদের ভয়ে বিভিন্ন সময় তাদের উল্লেখিত অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায়। এই চক্রের তৃতীয় গ্রুপের সদস্যরা তাদের অ্যাকাউন্টে ভিকটিমের পাঠানো টাকা সংগ্রহ করত’, যোগ করেন ওয়ালিদ।
ডিএমপি জানায়, গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের কাছে চাঁদাবাজির শিকার একজন ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন যে, অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী সেভেন স্টার গ্রুপের সদস্য মালিবাগের জিসান মাহমুদ হিসেবে পরিচয় দেয়। তারা সংগঠন পরিচালনার জন্য ভিকটিমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভিকটিম বিষয়টি গুরুত্ব না দিলে চাঁদাবাজরা তাকে বিভিন্ন মোবাইল নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে অপহরণ ও হত্যার হুমকি প্রদান করে। ভিকটিম ভয়ে তাদের দেওয়া বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে সর্বমোট ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। টাকা পাওয়ার পর চাঁদাবাজরা তার কাছে আরো মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম তাদের অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।’