সংসদের আইন অনুযায়ী পাপুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
অর্থ ও মানবপাচার সংশ্লিষ্ট মামলায় সম্প্রতি কুয়েতের আদালতে লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের সাজার রায়ের কপি হাতে পেয়েছে বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর পূর্বাচল ক্লাবে ফেসবুকভিত্তিক নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন উই-এর সম্মেলনের উদ্বোধন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী জানান, রায়ের কপি ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের স্পিকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে রায়ের কপি কবে সরকারের হাতে পৌঁছেছে তা স্পষ্ট করেননি তিনি। সাংসদ পাপুল কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কাছে কোনো আইনি সহায়তা চাননি, তিনি কোনো কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে যাননি, সেখানে তিনি ব্যবসায়ী হিসেবে অবস্থান করছেন বলেও জানান মন্ত্রী।
মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর পাপুলের সংসদ সদস্য পদ থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল মোমেন বলেন, সংসদের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রায়ের কপি অনুযায়ী পাপুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ৬১ পৃষ্ঠার রায়ের কপি পেয়েছি এবং এটি সঠিক জায়গায় প্রেরণ করা হয়েছে।’
‘আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম যেহেতু বাংলাদেশের মতো যে কোনো রায় দিতে কুয়েতেও সময় লাগে এবং সেখানে রাষ্ট্রদূতকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।’
আবদুল মোমেন বলেন, আবেদন না করায় সরকার দণ্ডপ্রাপ্ত সাংসদকে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা দিচ্ছে না। পাপুল কূটনীতিক পাসপোর্ট বা সংসদ সদস্য হিসেবে কুয়েতে যাননি, তিনি সেখানে ব্যবসায়ী হিসেবে গিয়েছিলেন।
‘কুয়েতে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং তিনি সেখানে আবাসিক ব্যবসায়ী হিসেবে অবস্থান করছিলেন,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে গত বছরের জুনে কুয়েতে গ্রেপ্তার হন পাপুল। গত ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন দেশটির একটি আদালত। পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানির জন্য আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন বাংলাদেশের হাইকোর্ট।
এর আগে, নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করায় পাপুলের সংসদ সদস্য পদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া।
গত বছরের ৬ জুন পাপুলকে গ্রেপ্তার করে কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে তার বিরুদ্ধে কুয়েতে মানবপাচার ও অর্থপাচারের মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগের সঙ্গে জড়িত থাকায় ২৮ জানুয়ারি পাপুলকে চার বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন কুয়েতের একটি আদালত।
গত বছরের ৯ জুন বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সাংসদ পাপুল ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের বিবরণ চেয়ে নোটিশ দেয়। তাদের পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র, টিআইএন এবং আয়কর রিটার্নের কপি ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছিল।