সরকারের বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে : রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আমাদের ইতিহাস বলছে, এই দেশের মানুষ কখনোই স্বৈরশাসক গ্রহণ করেনি। স্বৈরশাসকের পতন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে। শেখ হাসিনা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। তাঁর পতনের ঘণ্টা বাজছে।
জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রিজভী।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে অত্যাচার-নিপীড়ন এবং বিরোধী শক্তি এবং মতকে ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছেন, এর কারণটাই হচ্ছে তাঁর পায়ের নিচে মাটি নেই। সেজন্য তিনি এখন অন্ধ রাষ্ট্রশক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে দমিয়ে রেখে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছেন। এইটা আর তিনি পারবেন না। তাঁর বিদায়ঘণ্টা বেজে গেছে। এখন তাঁর পতনের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে আমরা একটি সংকটকাল অতিক্রম করছি। তাই নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বিশ্বাস করে তারা সবাই আজকে একত্রিত হয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকের এই কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদের ভয়ংকর রূপে আত্মপ্রকাশ করায় এই সরকার নানাভাবে জুলুম-নির্যাতন করছে জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি। বেগম খালেদা জিয়া বন্দি। তার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাঁকে মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত করার জন্য নানাভাবে নানানপন্থা অবলম্বন করছেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণে সারা দেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে, তারা বিক্ষুব্ধ।
এ দিকে সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে আজ মানববন্ধনের আয়োজন করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপি। জিনজিরা বিএনপির কার্যালয়ের সামনের সড়কে এই কর্মসূচি করার কথা ছিল। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফুটপাতেও দাঁড়াতে দেয়নি। পরে কার্যালয়ের ভেতরে প্রতিবাদ সভা করে কর্মসূচি শেষ করা হয়।
এ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করেছিল স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। সেখানে মনে হয়েছে জিনজিরা এলাকায় হরতাল চলছে। পুলিশ এমন অবস্থান নিয়েছে, যারা মানববন্ধন করতে চেয়েছিলেন তাদেরকে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে কিছু দূরেই আওয়ামী লীগের অফিস। সেখানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছেন, যাতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মানববন্ধন করতে না পারেন। একদিকে পুলিশের রাইফেল, অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী। তিনি অভিযোগ করেন, এক সড়কে পুলিশের দুই নীতি দেখলাম। অসংখ্য নেতা-কর্মী এসেও কর্মসূচিতে পুলিশের বাধায় অংশ নিতে পারেননি। এতেই বোঝা যায় সরকারের ভিত একেবারে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
নিপুণ রায় চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার অন্যায়-অত্যাচার আজকে শুধু বাংলাদেশ নয়, আন্তর্জাতিকভাবে এটা প্রচারিত হচ্ছে, প্রকাশিত হয়েছে। মুখ দেখাতে পারছেন না তারা। তাই আর যাতে কেউ কথা বলতে না পারে, কণ্ঠের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতীক বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে তারেক রহমানকে দেশে আসতে না দিয়ে ভয়ংকর নৈরাজ্য তৈরি করেছে এই ফ্যাসিবাদী সরকার। তারা মনে করেছে আজীবন এমন করে ক্ষমতায় টিকে থাকবে, তাদের অপকর্ম কেউ জানবে না। কিন্তু সবাই জেনে গেছে।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, তাঁতীদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।