সাংবাদিকতায় কর্মজীবন শুরু নতুন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন মো. সাহাবুদ্দিন। নির্বাচন কমিশন আজ সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে বঙ্গভবনের বাসিন্দা হচ্ছেন মো. সাহাবুদ্দিন। তিনিই বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের স্থলাভিষিক্ত হবেন। আগামী ২৩ এপ্রিল বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হবে।
মো. সাহাবুদ্দিন ছাত্রজীবন শেষে তাঁর পেশাগত জীবন শুরু করেন সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে। ১৯৮০ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দৈনিক বাংলার বাণীর সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন তিনি।
১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতায় পেশায় সরাসরি যুক্ত না থাকলেও তিনি পাবনা প্রেসক্লাবের আজিবন সদস্য।
নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সম্পর্কে যা জানা যায়
গতকাল রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিনের মনোনয়নপত্র পেশ করার পর সাংবাদিকদের সামনে তাঁর পরিচয় তুলে ধরেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেখানে ওবায়দুল কাদের জানান, মো. সাহাবুদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী এবং তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডার সার্ভিসে যোগ দেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তাঁকে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
মো. সাহাবুদ্দিন ১৯৪৯ সালে পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৪ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৫ সালে তিনি আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।
ছাত্র জীবনে তিনি পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক আইনে তিনি তিন বছর কারাগারে বন্দি ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি শেখ মুজিব হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন ২০০১ সালে সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা, হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন ও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেব দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।