সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঈদ উদ্যাপন
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ মঙ্গলবার দেশের বেশ কিছু এলাকায় ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছে অনেক মানুষ ও বিভিন্ন অনুসারীরা। তাঁরা আজ সকালে ঈদের জামাতে অংশ নেন। পরে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে তাঁরা পশু কোরবানি দেন।
বিভিন্ন এলাকায় ঈদুল আজহা উদযাপন নিয়ে আমাদের প্রতিনিধি ও প্রতিবেদকদের পাঠানো খবর :
আরিচ আহমেদ শাহ : চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার ৬০টি গ্রামের অনেক মানুষ, মির্জাখীল দরবারের অনুসারী ও চন্দনাইশ জাঁহাগিরিয়া মমতাজিয়া দরবার শরীফের অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে আজ মঙ্গলবার ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছেন। তাঁরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের পর পশু কোরবানি দেন।
সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ও বাড়বকুণ্ডের দুটি গ্রামসহ সাতকানিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা, বোয়ালখালী ও লোহাগাড়া উপজেলার ৬০টি গ্রামে ঈদুল আজহা পালন করেছে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। নামাজের পর পশু কোরবানি দেন তাঁরা।
এ ছাড়া আজ সকালে চন্দনাইশ জাঁহাগিরিয়া মমতাজিয়া দরবার শরীফে অনুসারীদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম জামাতে ইমামতি করেন দরবারের সাজ্জাদানশীল মাওলানা সৈয়দ মো. আলী। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন শাহজাদা মাওলানা মো. মনজুর আলী। পরে দেশের শান্তি ও রোগমুক্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদক : চাঁদপুরের প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষ আজ মঙ্গলবার ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছে। কয়েক যুগ ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তারা ঈদ উদযাপন করে আসছে। চাঁদপুরে সকাল থেকেই ছিল বৃষ্টি। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ঈদ জামাতে অংশ নেন স্থানীয়রা।
এদিকে, একদিন আগে ঈদ উদ্যাপনের ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাদ্রা পীর মরহুম মাওলানা ইসহাক খানের ছেলে মাওলানা জাকারিয়া আল মাদানী। তিনি বলেন, সারা দেশে বর্তমানে প্রায় কোটি মুসলিম সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উৎসব পালন করছে। শুধু সাদ্রা পীরের অনুসারী নয়, দেশে এখন বিভিন্ন হুজুরের অনুসারীরাও সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদ্যাপন করছে।
চাঁদপুরে যেসব গ্রামের অনেক বাসিন্দা ঈদ উদ্যাপন করছে সেগুলো হলো হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, বলাখাল, মনিহার, অলিপুর, বড়কুল, শমেশপুর, ঝাঁকনি, রামচন্দ্রপুর, প্রতাপুর, বেলচোঁ, উভারামপুর, সুরঙ্গচাল ও গোবিন্দপুর। ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, বিঘা, বাছপাড়া, খিলা, ওড়তলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নোয়ারহাট, বাশারা, ফনিসাইর, কামতা, পাইকপাড়া, কাইতারা, টোরামুন্সীরহাট, মূলপাড়া, বদরপুর ও তেলিসাইর। মতলব উপজেলার আশ্বিনপুর, নায়েরগাঁও, পাঁচানী, দশানী, মোহনপুর, এখলাসপুর ও বেলতলী। এ ছাড়া শাহরাস্তি ও কচুয়ার কয়েকটি গ্রামের অনেকেই ঈদ উদ্যাপন করছে।
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে ঈদ পালন করে আসছেন সাদ্রা পীর মরহুম মাওলানা ইসহাক খানের অনুসারীরা। ১৯৩১ সালে প্রথম হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর বড়কুল ইউনিয়নের সাদ্রা গ্রামে তিনি এই রীতি চালু করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশাল বিভাগের ৭৫টি মসজিদে ঈদুল আজহার আগাম জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে এসব ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ জাঁহাগিরিয়া শাহসুফি দরবার শরীফের অনুসারীরা রয়েছেন। পৃথিবীর কোনো প্রান্তে চাঁদ দেখা গেলে তার সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাসহ যাবতীয় ধর্মীয় আচার পালন করেন তাঁরা।
বরিশাল নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাজকাঠীর হাজিবাড়ি শাহসুফি জাঁহাগিরিয়া জামে মসজিদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় অনুসারীদের ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের জামাতে মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল কম। নামাজ শেষে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
মুসল্লিরা বলেন, করোনা মহামারির কারণে এবার মানুষের আর্থিক অনটন রয়েছে। এ কারণে এবার অনেকেই পশু কোরবানি দেয়নি।
ঈদ জামাত শেষে মোনাজাতে করোনা মহামারি থেকে রক্ষার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া কামনা করা হয় বলে জানান শাহসুফি দরবার শরীফের অনুসারী নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁজকাঠী হাজিবাড়ি শাহসুফি জাঁহাগিরিয়া জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমির হোসেন মিঠু। তিনি জানান, মূলত সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সব ধর্মীয় আচার পালন করেন তাঁরা। বিভাগের ছয় জেলা ও মহানগরের ৭৫টি মসজিদে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ফারুক হোসেন, দিনাজপুর : সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুর সদরসহ পাঁচ উপজেলার বেশকিছু গ্রামে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকাল সাড়ে ৭টায় দিনাজপুর শহরের পার্টি সেন্টারে কয়েকটি গ্রামের দুই শতাধিক মানুষ ঈদ জামাতে নামাজ আদায় করে।
এদিকে সদর ছাড়াও চিরিরবন্দর, সেতাবগঞ্জ, বিরামপুর ও খানসামার বেশ কিছু গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নামাজ শেষে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে তারা। পরে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দেয়।