স্কুলে প্রধান শিক্ষককে মারপিট, প্রতিবাদে ডিসি-এসপিকে স্মারকলিপি
মেয়েদের স্কুলগেটে মাইক্রোবাস কাউন্টার বসাতে বাধা দেওয়ায় পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছেন মাইক্রোবাস চালক ও দুর্বৃত্তরা। ঘটনার বিচার চেয়ে প্রতিবাদ সভা, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন জেলা শিক্ষক সমিতির নেতা ও মানবাধিকার কর্মীরা।
পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শহরের প্রাণকেন্দ্রে আব্দুল হামিদ সড়কে প্রায় দেড়শ বছরের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ টাউন গার্লস হাইস্কুল। গত কয়েক মাস ধরে রনি, জ্যাকিসহ বেশ কিছু রেন্ট-এ কার চালক স্কুল গেটে কাউন্টার বসানোর চেষ্টা করে। তাতে বাধা দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন তারা। বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে রেন্ট-এ কার চালকেরা স্কুল গেটে বেঞ্চ পেতে বসে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করতো। বার বার নিষেধ করার পরও তারা স্কুল গেটে গাড়ি রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতো। প্রধান শিক্ষক রবিউল করিম সম্প্রতি স্কুল গেটে জাতির পিতার নামে ‘মুজিব কানন’ (বাগান) তৈরির উদ্যোগ নিলে গত সোমবার (২৫ এপ্রিল) রনি, জ্যাকির নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের সন্ত্রাসী স্কুলের কম্পাউন্ডে এসে লাঠি, লোহার রড, চাপাতি দিয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল করিমকে মারাত্মকভাবে আহত করে। পরে তাঁকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
দেলোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় গত সোমবারই রনি, জ্যাকিসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
পাবনা জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি নওশের আলম মন্টু বলেন, ‘মেয়েদের স্কুল কম্পাউন্ডে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আক্রমণের শিকার হওয়ায় জেলা শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।’
আসামিদের শাস্তির দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করা না হলে জেলার শিক্ষকেরা কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ আসামি ধরতে কাজ করছে।
হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক পাবনার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রব মন্টু বলেন, পাবনা টাউন গার্লস হাইস্কুল বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্রের সামনের সড়কে রেন্ট-এ কার চালকেরা অবৈধভাবে একাধিক কাউন্টার বসিয়েছে। তারা যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে যানজট সৃষ্টির পাশাপাশি স্কুলছাত্রী ও পথচারীদের উত্ত্যক্ত করে। সন্ধ্যা হলেই প্রকাশ্যে এসব কাউন্টারে অসামাজিক কাজ করে। আমরা শিক্ষকের উপর হামলার বিচার দাবির পাশাপাশি এসব কাউন্টার উচ্ছেদের প্রশাসনিক ব্যবস্থার দাবি জানাই। প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য দেন হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক পাবনার চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন খান, শিক্ষক উম্মে হাবিবাসহ জেলার বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকেরা।