স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি ইসলামী ফ্রন্টের
নির্বাচন কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলের সংলাপের দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকাস্থ নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রতিনিধি দলের সাথে আলোচনায় অংশ নেন সিইসি হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষে সংলাপে অংশ নেন- বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মান্নান, মহাসচিব মাওলানা এম এ মতিন, প্রেসিডিয়াম সদস্য শাইখ আবু সুফিয়ান খান আবেদী আল কাদেরী, অধ্যক্ষ আহমদ হোসাইন আল কাদেরী, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী হারুন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ আবু জাফর মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন, সাংগঠনিক সচিব মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদি, যুগ্ম-সাংগঠনিক সচিব অ্যাডভোকেট ইসলাম উদ্দীন দুলাল, প্রচার সচিব মাওলানা রেজাউল করিম তালুকদার, দপ্তর সচিব মুহাম্মাদ আব্দুল হাকিম ও ডা. এস এম সরওয়ার।
সংলাপে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ বলেন, ৯০ দশক হতে অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে রূপরেখা ও কর্মকাণ্ড জাতির সামনে প্রকাশ হয়েছে; তাতে আমাদের পূর্বানুমানই সত্য প্রমাণিত হয়েছে। অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না এবং নিরপেক্ষ, অবাধ- সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পাদনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি যে স্থায়ী সমাধান নয়, তা ইতোমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে। তাই ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠার পর হতে একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।
তারা বলেন, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন পাস করা হলেও আমরা মনে করছি-এ আইনে নির্বাচন কমিশনের হাত পা বেঁধে রাখা হয়েছে। সিদ্ধান্তগ্রহণে এ কমিশন আজ্ঞাবহ, পরাধীন। একটি কার্যকর স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনকল্পে নির্বাচনকালীন সময়ে স্থানীয়
সরকার, জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা ও অর্থ- এ পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়কে নির্বাচন কমিশনের অধীনে সাংবিধানিক পন্থায় আনার ব্যবস্থা করার দাবি জানায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যদি উল্লেখিত মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা না হয় তবে কখনো নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হবে না। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। বাংলাদেশ ইসলামী নেতৃবৃন্দ- জাতীয় নির্বাচনে জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে একজন চৌকস নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার পদে পদায়ন, প্রিসাইডিং অফিসারকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় যে কোনো অভিযোগ দ্রুত সময়ে মীমাংসা করার ক্ষমতা ন্যস্ত করণ, তার ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তার বিধানপ্রণয়ন করাসহ নৈতিকভাবে পদস্খলিত বা অসদুপায় অবলম্বনের অপরাধ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, ভোটকেন্দ্রের গোপন কক্ষে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটাধিকার প্রয়োগে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সি সি ক্যামেরা দ্বারা নজরদারি নিশ্চিতকরণ, জনগণের টাকা আত্মসাৎকারী কোনো ঋণখেলাপীদের প্রার্থিতা বাতিল করতে পদক্ষেপগ্রহণ, প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সৎ ও যোগ্য প্রার্থী বাচাইয়ের লক্ষ্যে ‘জনতার মুখোমুখি সংসদ সদস্য প্রার্থী’ শিরোনামে উন্মুক্ত আলোচনার আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানানোসহ ৯ দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন।