স্বামীকে হত্যা, স্ত্রীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী শেফালীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার ৪নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেসমিন আরা বেগম এই রায় ঘোষণা করেন। কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মিডফোর্ড হাসপাতালের এমএলএসএস শেফালী (ভিকটিমের স্ত্রী), নয়ন ও আক্কাস বেপারী। রায়ে বিচারক আসামিদের কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন।
নথি থেকে জানা গেছে, মামলার ভিকটিম সাইদ হাসান বাদল (৪০) ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর পর্যন্ত স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস সেকশনে অফিস সহকারী হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সাইদ কর্মরত থাকাকালীন ১৯৯৯ সালে ওই হাসপাতালে কর্মরত এমএলএসএস শেফালী (৫০) গোপনে সাইদকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের ঘরে কন্যা সন্তান বীথি (১৩) জন্মগ্রহণ করে। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে সাইদ আমেরিকায় চলে যায়। আমেরিকায় থাকাকালে সাইদ হাসান তার মেয়ে বীথির যাবতীয় খবচ বহন করতো। কিন্তু তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ছিল।
নথি থেকে আরও জানা যায়, সাইদের অপর ভাই ইঞ্জিনিয়ার জাহিদ হাসানসহ ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি আমেরিকা থেকে নগদ ১০ হাজার ইউএস ডলার ও মালামালসহ বাংলাদেশ বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এসময় তার ভাতিজা জাহিদ হাসান প্রাইভেটকারে নিয়ে তাকে রিসিভ করতে যায়। সাইদ দেশে আসার খবর শুনে তার স্ত্রী শেফালীও বিমানবন্দরে যায়। বিমানবন্দর থেকে সাইদ হাসান বাদলকে রিসিভ করে জাহিদ হাসানের প্রাইভেটকারে বাদল ও তার স্ত্রী শেফালী এবং মালামালের লাগেজসহ আসার পথে শেফালী বাদলকে শসা খাওয়ায়। এরপর ওই দিন মিটফোর্ড হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকের পূর্বদিকে টিনসেডে শেফালী জাহিদ হাসানকে রেখে শেফালী ও সাইদ হাসান বাদল মালামাালের লাগেজসহ শেফালীর বাসায় চলে যায়। ভাতিজা জাহিদ হাসান দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর একা একাই শেফালীর জাহিদ হাসানকে জানায় যে, সাইদ অসুস্থ। তাকে মিটফোর্ড হাসাপাতালে নিতে হবে।
এরপর সাইদ হাসান বাদলকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসক সাইদ হাসান বাদলকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সাইদের ভাই ডা. শহিদ হাসান রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পরে ২০১২ সালের ২৪ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ।