হাসপাতাল থেকে আজ বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
দীর্ঘ ৮০ দিন চিকিৎসা শেষে আজ মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে সন্ধ্যা ৬টার পর গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় ফিরবেন বলে জানা গেছে। এর আগে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যেরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের গণমাধ্যম শাখার সদস্য শায়রুল কবির খান এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খালেদা জিয়ার বাসভবনের একাধিক সূত্র এবং নিরাপত্তায় নিয়োজিত দুই সিএসএফ সদস্য জানান, খালেদা জিয়াকে বাসভবনে নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে এরই মধ্যে বাসভবনে কর্মরত সবার করোনা টেস্ট করা হয়েছে। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে পুরো বাসভবন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত এক চিকিৎসক জানান, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তক্ষরণ আপাতত বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবস্থায় তাঁকে ফিরোজায় রেখে চিকিৎসার জন্য চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এজন্য তাঁর বাসাতেই চিকিৎসার প্রাথমিক সব আয়োজন রাখা হয়েছে।
চিকিৎসক আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজেও এখন আর হাসপাতালে থাকতে চাইছেন না। এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রায় আড়াই মাস ধরে রয়েছেন তিনি। চিকিৎসকেরাও মনে করছেন, বাসায় পারিবারিক পরিবেশে রাখতে পারলে খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানিসকভাবে আরও শক্ত হতে পারবেন।’
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, দাঁত, চোখের সমস্যাসহ সর্বশেষ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত ছিলেন।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়ার রক্তবমি হওয়ার পরপরই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসক ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি বিশেষ মেডিকেল টিম তাঁকে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে।
গত ২৮ নভেম্বর খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা তাঁর বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ‘লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হওয়ায় খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।’ তিনবার এই রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়া গেলেও চতুর্থবারের জন্য আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
ওই সময়ে চিকিৎসকেরা জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁরা অসহায় বোধ করছেন। বাংলাদেশে এ ধরনের রক্তক্ষরণ সামাল দেওয়ার কারিগরি সুযোগ নেই। তাঁকে দ্রুত দেশের বাইরে নিতে হবে। তারা যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানির বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুপারিশও করেন। পরিবারের পক্ষ থেকেও বিদেশে চিকিৎসায় সরকারের অনুমতি নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতায় দেশের বাইরে যেতে দেওয়া সম্ভব নয় বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।