এরশাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা চলতে বাধা নেই
সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা ৩১ মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেননি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
একই সঙ্গে এরশাদের করা এই আবেদনের ওপর আগামী ২ জানুয়ারি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। তবে নিম্ন আদালতে সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মামলা চলতে বাধা নেই।
আজ মঙ্গলবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামুল হক এসব আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের জানান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় আবার সাক্ষ্য গ্রহণের অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলার বিচার কার্যক্রম আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন বিমানবাহিনীর সাবেক প্রধান সুলতান মাহমুদ, সাবেক সহকারী প্রধান মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও ইউনাইটেড ট্রেডার্সের পরিচালক এ কে এম মুসা। মামলার শুরু থেকেই এ কে এম মুসা পলাতক।
চলতি বছর ৮ নভেম্বর এরশাদের বিরুদ্ধে রাডার ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলাটিতে পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লা। নিম্ন আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে দুদক।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এ মামলার বিচার কার্যক্রম আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন এইচ এম এরশাদ। আজ এই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে চেম্বার আদালত এসব আদেশ দিলেন।
দুই যুগ আগের করা এ মামলা বিচারের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর পর ২০১৪ সালে ঢাকার তৎকালীন বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবদুর রশীদ শুনানিতে বিব্রত বোধ করেন। এরপর মামলাটি বিচারক কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আসে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি এখন যুক্তিতর্কের পর্যায়ে আছে।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, ১৯৯২ সালের ৪ মে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো মামলাটি দায়ের করে। ১৯৯৪ সালের ২৭ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ১৯৯৫ সালের ১২ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন বিমানবাহিনীর প্রধান সদর উদ্দিন আহমেদ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কাছে বাহিনীর জন্য যুগোপযোগী রাডার ক্রয়ের আবেদন করেন। জিয়াউর রহমানের অনুষ্ঠিত এক সভায় ফ্রান্সের থমসন সিএসএফ কোম্পানি নির্মিত অত্যাধুনিক একটি হাই পাওয়ার রাডার ও দুটি ‘লো লেভেল’ রাডার ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান এরশাদসহ অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ে থমসন সিএসএফ কোম্পানির রাডার না কিনে বেশি দামে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্টিং কোম্পানির রাডার কেনেন। এতে সরকারের ৬৪ কোটি চার লাখ ৪২ হাজার ৯১৮ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়।