গাড়িটিকে টেনে এক মাইল দূরে নিয়ে যায় ট্রেন
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় ট্রেন দুর্ঘটনায় একই পরিবারের চারজনসহ মোট পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই একটি প্রাইভেটকারে ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় রেললাইনের ওপরে উঠে পড়া প্রাইভেটকারকে টেনে এক মাইল দূরে নিয়ে যায় ট্রেন। এতে প্রাইভেটকারটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।
আজ রোববার সকালে উপজেলার গোয়ালবাথানে ওই ট্রেন দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন যোগাযোগ পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ থাকে। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ওই পথে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
এ ঘটনায় নিহতদের পরিচয় জানিয়েছে পুলিশ। এঁরা হলেন গোয়ালবাথান গ্রামের নুশরাত জাহান লাকি আক্তার (৩৬), তাঁর ছয় বছরের শিশুকন্যা রুবাইদা নুশরাত রিভা, নুশরাতের চাচাতো দেবরের স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (৩০), তাঁর পাঁচ বছরের শিশু তহসিন আহমেদ তালহা ও প্রাইভেটকারচালক মিনহাজ উদ্দিন (৪৫)।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোতালেব হোসেন বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই ট্রেন দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকেল ৩টার পর ওই রেললাইনে আবারও ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. হাবিবুর রহমান বার্তা সংস্থা বাসসকে বলেন, ঘটনার পর ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন (রিলিফ ট্রেন) ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। উদ্ধারকাজ শেষে পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। কলকাতাগামী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়া ট্রেনগুলোও যথারীতি ছেড়ে গেছে।
দুর্ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্থানীয়রা জানান, আজ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে কালিয়াকৈরের গোয়ালবাথান এলাকা দিয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেসের একটি ট্রেন ঢাকা থেকে কলকাতা যাচ্ছিল। ট্রেনটি গোয়ালবাথান লেভেল ক্রসিংয়ে আসার ঠিক আগ মুহূর্তে হুড়োহুড়ি করে রেললাইনের ওপরে উঠে পড়ে প্রাইভেটকারটি। রেললাইনে ওঠার পরপরই প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দেয় ট্রেন।
প্রাইভেটকারটিকে টেনেহিঁচড়ে প্রায় এক মাইল দূরে সোনাখালী ব্রিজে নিয়ে ফেলে দেয় ট্রেনটি। এতে প্রাইভেটকারটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। লাইনচ্যুত হয় ট্রেনটির একটি বগি। এ দুর্ঘটনায় পাঁচজন ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
লাশগুলো উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।