‘রাজিব গান্ধী’ ৮ দিনের রিমান্ডে
রাজধানীর গুলশানে স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার অন্যতম ‘পরিকল্পনাকারী’ জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজিব গান্ধীর আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ শনিবার দুপুর ৩টায় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদ্ন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম (সিটি) ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির রাজিব গান্ধীকে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মাহমুদুল হাসান আটদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) ফরিদ মিয়া এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি জানান, আসামির পক্ষে আদালতে আজ কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এদিকে আজ দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে সিটির প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, গুলশান হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজিব গান্ধীকে। আশা করা যাচ্ছে, তাঁর কাছ থেকে গুলশান হামলাসংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পওয়া যাবে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে টাঙ্গাইল থেকে রাজিব গান্ধীকে গ্রেপ্তার করে সিটি।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত বছরের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি বেশ কয়জনকে জিম্মি করে জঙ্গিরা। পরদিন সকালে সেনা কমান্ডো অভিযানে জিম্মিদশার অবসান হয়।
তার আগেই ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। জঙ্গিদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে মারা যান দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এ ছাড়া অভিযানে মৃত্যু হয় সন্দেহভাজন পাঁচ জঙ্গির।
আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করে পাঁচ হামলাকারীর ছবি প্রকাশ করলেও পুলিশ এ ঘটনার জন্য দেশীয় জঙ্গি দল জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশকে (জেএমবি) দায়ী করে আসছে।
সেদিন অভিযান শেষে উদ্ধার ১৩ জনসহ ৩২ জনকে নেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে। এর পরেই এ ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। মামলা নং-১(৭)১৬।
গত বছরের ৩ আগস্ট রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে এ মামলার সন্দেহভাজন তাহমিদ এবং গুলশান আড়ংয়ের সামনে থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাতকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি)। এর পর তাহমিদ ও হাসনাতকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
পরবর্তী সময় পুলিশ হাসনাতের বিরুদ্ধে গুলশান হামলার সরাসরি অভিযোগ এনে মূল মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় ও অপরদিকে তাহমিদের বিরুদ্ধে পুলিশকে অসহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়। এর পরে তাহমিদ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালত থেকে জামিন নেন অপরদিকে হাসনাতের জামিন চাওয়া হলে একাধিকবার জামিন নাকচ করা হয়। তিনি এখন কারাগারে আটক রয়েছেন।
হাসনাতকে ২০১২ সালে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অপরদিকে ব্যবসায়ী শাহরিয়ার খানের ছেলে তাহমিদ কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।
গুলশানের ঘটনার একদিন আগে দেশে ফিরে ইফতারের পর বন্ধুদের সঙ্গে তিনি ওই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন বলে পরিবারের দাবি।