চোখে পানি নিয়ে কাঠগড়ার প্রান্তে চুপচাপ সানি
ক্রিকেট ক্যারিয়ারে গত বছরই একটা ধাক্কা এসেছিল। বোলিং অ্যাকশনের কারণে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় আরাফাত সানিকে। এবার দেশের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো সানিকে। অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে কাঠগড়ার একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছিলেন সানি। মুখে কোনো কথা ছিল না, চোখে ছিল জল।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা এক মামলায় আজ রোববার গ্রেপ্তার করা হয় জাতীয় দলের বাঁ-হাতি অফ স্পিনার আরাফাত সানিকে। সানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাসরিন সুলতানা নামের এক মেয়ের অশ্লীল ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন। গ্রেপ্তারের পর আজই আদালতে হাজির করা হয় সানিকে। তাঁকে একদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।
দুপুর ২টার পর আদালতে আনা হয় আরাফাত সানিকে। গায়ে হালকা গোলাপি রঙের হুডি আর কালো প্যান্ট পরা সানিকে বেশ ভারাক্রান্ত দেখা যায়। কেবল থুতনিতে নয় দাড়ি পুরো গালে। দুই হাত ধরে রেখেছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। সাংবাদিক আর উৎসুক মানুষের ভিড়ও ঠেলতে হয়েছে।
বেলা ২টা ৫০ মিনিটে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতের ষষ্ঠ তলায় সানিকে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাঁকে ঢাকার মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুইয়ের এজলাসে কাঠগড়ায় উঠানো হয়। এ আদালতের কাঠগড়া পুরোটা গ্রিল দিয়ে ঢাকা। সানিকে উঠানোর কিছুক্ষণ পরই এ আদালতে অন্য বন্দিদের হাজির করা হয়। অন্য বন্দিরা সানির সঙ্গে একই কাঠগড়ায় দাঁড়ান।
কাঠগড়ার এক প্রান্তে দাঁড়িয়েছিলেন সানি। শুনানির আগ পর্যন্ত সানি কোনো কথাই বলেননি। বরং সময় যত গড়িয়েছে ভারাক্রান্ত ভাবটা আরো বাড়ে। ১৫ মিনিট কাঠগড়ায় ছিলেন সানি। অন্য বন্দিদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। কেবল নিজের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি আইনজীবীকে জানান, আগামী ২৮ জানুয়ারি জাতীয় লিগে তাঁর খেলা। বিষয়টি আদালতকে জানানোর জন্য আইনজীবীকে অনুরোধ করেন তিনি। ঢাকা মহানগরের হয়ে জাতীয় লিগে খেলছেন।
রিমান্ডের আদেশ দেওয়ার পর সানিকে খুব চিন্তিত দেখা যায়। পরে আদালতের হাজতখানায় পাঠানো হয় সানিকে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর উভয়ের সম্মতিতে তাঁরা বিয়ে করেন।
এজাহারে তরুণী বলেন, প্রায় সাত বছর আগে আরাফাতের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এর সূত্র ধরে দুজনের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠতা হয়, তার একপর্যায়ে পরস্পরকে ভালোবেসে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর তাঁরা বিয়ে করেন। কিন্তু বিষয়টি তাঁরা অভিভাবকদের জানাননি।
তরুণী বলেন, ‘বিগত দিনে সে (আরাফাত) আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিয়ের বিষয়টি অভিভাবকদের জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে নেওয়ার জন্য বলে। কিন্তু কিছুদিন হলো সে এ বিষয়ে কোনো কর্ণপাত করে না। সে নানা রকম অজুহাত দেখায়, কালক্ষেপণ করতে থাকে। যখন আমার পরিবার থেকে তুলে নেওয়ার কথা বলে, তখন সে সম্পর্ক ছিন্ন করার ব্যবস্থা করে।’
এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ১২ জুন রাত ১টা ৩৫ মিনিটে সে আমার নাম নাসিরন সুলতানা নামে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দিয়ে ফেসবুকে আইডি খোলে। এর পর তাঁর কাছে থাকা আমাদের দুজনের কিছু অন্তরঙ্গ ছবি ফেসবুকে এবং আমার একক কিছু ছবি আমার ফেসবুকে মেসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয়। এর পর সে আমাকে নানা রকম হুমকি দিতে থাকে। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করেছি।’