সাংবাদিক শিমুলের শোকে চলে গেলেন নানিও
দৈনিক সমকালের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলের নিহতের খবর পেয়ে সহ্য করতে না পেরে তাঁর নানিও মারা গেছেন।
আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে শাহজাদপুরের মেয়রের ব্যক্তিগত শটগানের গুলিতে গতকাল আহত হন সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুল। আজ শুক্রবার দুপুরে তিনি মারা যান।
সন্ধ্যায় এ খবর উপজেলার মাদলা গ্রামে শিমুলের নানি রোকেয়া বেগমকে (৯০) জানানো হয়। শোক সইতে না পেরে কিছুক্ষণ পরেই তিনি যান। এমনিতেই তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন।
সাংবাদিক শিমুলের ছোট ভাই মো. আজাদ এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টায় শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে সাংবাদিক শিমুলের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা তাঁর নিজ গ্রাম পোতাজিয়া ইউনিয়নের মাদলা গ্রামে অনুষ্ঠিত হবে এবং মাদলা কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হবে।
ব্যক্তিগত জীবনে সাংবাদিক শিমুল ছেলে সাদি মোহাম্মদ (১২) ও তামান্না খাতুন (৩) নামে এক মেয়ের জনক ছিলেন। এ বিষয়ে নিহতের স্ত্রী কামরুন নাহার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরুর ছোট ভাই হাসিবুল হক পিন্টু শাহজাদপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারপিট করেন। পরে মেয়রের বাসা থেকে পুলিশ পিন্টুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
এদিকে বিজয় মাহমুদকে মারপিটের ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মেয়রের বাসার সামনে পৌঁছালে কতিপয় লোক মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ঢিল মারে। একপর্যায়ে মেয়র তাঁর ব্যক্তিগত শটগান থেকে গুলিবর্ষণ করেন।
এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন।
গুরুতর আহত সাংবাদিক শিমুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তী সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আজ দুপুরে বগুড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় এলাকায় সাংবাদিক শিমুল মারা যান।