গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত দৈনিক সমকালের সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল ও তাঁর নানির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ শনিবার বেলা ১১টায় শাহজাদপুর টাউন ক্লাবের সামনের মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় বিপুল মানুষ।

জানাজার আগে বক্তব্য দেন সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সাবেক উপপমন্ত্রী হাসিবুর রহমান স্বপন।  এ ছাড়া বক্তব্য দেন দৈনিক সমকালের অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক তপন দাশ।

উপস্থিত মুসল্লিদের উদ্দেশে স্বপন বলেন, মেয়র হালিমুল হক মীরুর শটগানের গুলিতেই সাংবাদিক শিমুল গুলিবিদ্ধ হন। পরের দিন তিনি মারা যান। তিনি আরো বলেন, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় মীরু পালিয়ে গেছেন। পুলিশের চোখের সামনে এই গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অথচ পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

এদিকে শিমুল হত্যার বিচার দাবিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আধা বেলা হরতাল পালিত হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল থেকে এই হরতালের সমর্থনে শাহজাদপুরের বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিলও বের করে।

হরতালে সদর উপজেলার সব দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কারখানা ও যান চলাচল বন্ধ ছিল। সরকারি অফিস, আদালত ও ব্যাংক-বিমা খোলা থাকলেও জনসাধারণের উপস্থিতি কম ছিল। রিকশা, ভ্যান, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা যায়নি। ঘটেনি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হক জানিয়েছেন, শাহজাদপুর পৌর এলাকার বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ  মোতায়েন করা হয়েছে। সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মীরুর ছোট ভাই হাসিবুল হক পিন্টু শাহজাদপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিজয় মাহমুদকে মারপিট করেন। পরে মেয়রের বাসা থেকে পুলিশ পিন্টুকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে বিজয় মাহমুদকে মারপিটের ঘটনার প্রতিবাদে বিকেলে এলাকাবাসী মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি মেয়রের বাসার সামনে পৌঁছালে কতিপয় লোক মেয়রের বাসা লক্ষ্য করে ঢিল মারে। একপর্যায়ে মেয়র তাঁর ব্যক্তিগত শটগান থেকে গুলিবর্ষণ করেন।

এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গুলি ও হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়।

গুরুতর আহত সাংবাদিক শিমুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তী সময়ে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় গতকাল দুপুরে বগুড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে দুপুর ১টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় এলাকায় সাংবাদিক শিমুল মারা যান।