‘টঙ্গীতে শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল হবে’
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘শ্রমিকদের জন্য টঙ্গীতে আন্তর্জাতিক মানের ২০০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। সেখানে ১০ শয্যার একটি বার্ন ইউনিটও থাকবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার টঙ্গীতে টাম্পাকো ফয়েলস কারখানায় হতাহতদের সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক এ কথা বলেন। টঙ্গীতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়ের মিলনায়তনে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারের পক্ষ থেকে এক কোটি ১৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে শ্রম প্রতিমন্ত্রী জানান, টঙ্গী এলাকায় জমি প্রাপ্তিসাপেক্ষে নারী শ্রমিকদের আবাসনের জন্য একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে।
নিহত শ্রমিকদের উত্তরাধিকার ও আহত শ্রমিকদের মাঝে অনুদানের ওই চেক বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক। তিনি জানান, ট্যাম্পাকোর ঘটনায় নিহত ৩২ জন শ্রমিকের প্রত্যেকের উত্তরাধিকারকে তিন লাখ টাকা করে এবং এবং আহত ৪০ জন শ্রমিকের প্রতিজনকে ৫০ হাজার টাকার অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়। এ টাকার মধ্যে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দুই লাখ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংগৃহীত ফান্ড থেকে এক লাখ টাকা আছে। এ ছাড়া নিহত শ্রমিকদের উত্তরাধিকারকে শ্রম আদালত থেকে আরো এক লাখ টাকা দেওয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘শ্রমিকদের কোনো সন্তান সরকারি মেডিকেল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করলে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিল থেকে তিন লাখ টাকা এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ওই তহবিল থেকে ৫০হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। কোনো শ্রমিক ক্যানসারের মতো জটিলরোগে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা করে দেওয়া হবে।’
অনুষ্ঠানে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহম্মদের সভাপতিত্বে অন্যদের বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম আলম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আনিসুল আউয়াল, গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোলায়মান ও শ্রমিক নেত্রী সামসুন্নাহার প্রমুখ।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, গাজীপুরে টঙ্গীর বিসিক নগরীতে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনের মালিকানাধীন টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড কারখানায় গত ১০ সেপ্টেম্বর ভোরে ভয়াবহ বিষ্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ওই কারখানার বিশাল ভবনের অধিকাংশই ধ্বসে পড়ে বিশাল ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয়। এ ঘটনায় ৩৯ জন নিহত ও ৪০ জন আহত হয়। নিহতদের মধ্যে তিনজনের লাশ এখনো শনাক্ত করা যায়নি এবং অপর চারজন সম্পর্কে তদন্তকর্মকর্তা কোনো তথ্য দিতে পারেননি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ওই ধ্বংসস্তূপে প্রায় এক মাস উদ্ধার অভিযান চলে।