বিমানে বসে মোদির বার্তা, ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ’
‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ। এই সফর আমার স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে থাকবে। এই সফর ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারত্ব সুদৃঢ় করবে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা অতীতের অমীমাংসিত বিষয় সাফল্যের সঙ্গে কাটিয়ে উঠেছি। এটি আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে।’ – ৩৬ ঘণ্টার ঢাকা সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শেষ টুইট এটি। বাংলাদেশ সফরের সময়টাতে সফরের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে টুইটারে তাঁর ভক্ত-সমর্থকদের ব্যস্ত রেখেছিলেন মোদি।
৩৪ ঘণ্টার কিছু বেশি ব্যস্ত সময় কাটিয়ে আজ রোববার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে তাঁকে বহনকারী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব উড়োজাহাজ ‘রাজদূত’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। বিমানবন্দরে ভিভিআইপি টার্মিনালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে বিদায় জানান।
এর আগে আজ সন্ধ্যায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে বক্তৃতায় বাংলাদেশে ফিরে আসার ইচ্ছার কথা জানান নরেন্দ্র মোদি। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
হিন্দিভাষী ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মুখে জীবনানন্দ দাশের কবিতা ‘আবার আসিব ফিরে/ধানসিঁড়িটির তীরে/এই বাংলায়’ শুনে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এই বক্তব্যে বাংলাদেশে ফিরে আসার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন তিনি।
বক্তৃতার শুরুতে মোদি পরিষ্কার বাংলায় বলেন, ‘কেমন আছ? আমরা তোমার সাথে আছি। আমরা তোমাদের সাথে নিয়ে চলব।’ এ কথা বলার পর তিনি অতিথিদের কাছে জানতে চান ‘আমার বাংলা কেমন? ’
জনবক্তৃতা বাংলায় শুরু করলেও হিন্দিতে বক্তব্য দেন মোদি। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান ও সালমা খাতুনের নাম। উঠে আসে পোশাকশিল্পে বাংলাদেশের দ্বিতীয় অবস্থানের কথা। এ দেশে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার কথা বলতে গিয়ে এভারেস্ট জয়ী দুই নারী নিশাত মজুমদার ও ওয়াসফিয়া নাজরিনের নাম উল্লেখ করেন তিনি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা ও স্পিকার পদে নারীর আসীন থাকার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। এ ছাড়া সীমান্তে হত্যা, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক, পানি চুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন মোদি।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আবেগপূর্ণ যোগাযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি বলেন, আমরা তোমাদের সাথে নিয়ে চলবো।
সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক জীবনে তার সাফল্যের কথা এবং বাংলাদেশ সফরকালে তার অভিজ্ঞতার বিষয়গুলোও তুলে ধরছেন বক্তৃতায়।
ঢাকা সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, নানা রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও বাংলাদেশ বেশ কিছু ক্ষেত্রে দারুন উন্নতি করেছে যা উন্নয়নশীল দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমাকে অভিভূত করে তোলে। ভারত শুধু বাংলাদেশের আশে পাশে নয় তাদের সাথেও রয়েছে বলেও জানান মোদি।
বাংলাদেশে তার এই দুই দিনের সফরের দিকে শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্ব তাকিয়ে আছে এমন কথা উল্লেখ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্থল সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে আমরা দুই দেশের মানুষের আত্মার বন্ধন ঘটিয়েছি।’
অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন সমাজের সকল বিভাগের বিশিষ্টজনরা।ছিলেন রাজনৈতির দলের নেতা, ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, এমনকি বিভিন্ন ধর্মীয় নেতারাও।
গতকাল শনিবার সকাল সোয়া ১০টার কিছু আগে দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসেন নরেন্দ্র মোদি। এ সময় বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মোদির সফরকালে স্থল সীমান্ত চুক্তির (এলবিএ) অনুসমর্থনের দলিল হস্তান্তরসহ ২২টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও সম্মতিপত্র সই হয়।