অবশেষে রানা প্লাজার তহবিলে তিন কোটি ডলার
রানা প্লাজা বিপর্যয়ের ঘটনায় গঠিত আন্তর্জাতিক তহবিল অবশেষে এর লক্ষ্য অর্জন করতে পেরেছে। লক্ষ্যের তিন কোটি মার্কিন ডলার (১৯ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড) সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে।
urgentPhoto
শ্রমিক সংগঠনগুলো এই অর্জনকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজয় হিসেবে দেখছে। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সমর্থিত এই তহবিলে অর্থ দিয়েছে নামীদামি ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো।
রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারগুলোকে ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের লক্ষ্যে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাস থেকেই প্রচার চালিয়ে আসছে ‘ক্লিন ক্লথ ক্যাম্পেইন’ নামে একটি সংগঠন। সে সময় থেকে সারা বিশ্বের ১০ লক্ষাধিক ভোক্তা এসব নামীদামি কোম্পানির বিরুদ্ধে সমাবেশ করে। রানা প্লাজায় থাকা পাঁচটি কারখানার একটিতে এসব কোম্পানির পোশাক তৈরি হতো।
গত এপ্রিলে পশ্চিমা পোশাকের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বেনেট্টন এই সহায়তা খাতে সর্বশেষ ১১ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দেয়।
এ ব্যাপারে ক্লিন ক্লথ ক্যাম্পেইনের সদস্য ইনেক জেল্ডেনরাস্ট বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই দিন এসেছে। ওই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অবশেষে তাদের ক্ষতিপূরণ পাবে। এখন তারা নতুনভাবে জীবন শুরু করতে পারবে।’
ন্যায়বিচারের জন্য এটাকে অসাধারণ মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেন ইনেক। ইউরোপের ভোক্তা ও নাগরিকদের সহায়তা ছাড়া এই সাফল্য পাওয়া সম্ভব ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই ভোক্তারা দুই বছর ধরে ইউরোপজুড়ে এই দাবিতে চলা আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন। ইনেক বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে আবারো প্রমাণ করলাম যে যারা তাদের পোশাক তৈরি করে, তাদের ব্যাপারে ইউরোপের ভোক্তারা যত্নশীল এবং তাদের কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।’
২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) রানা প্লাজা দাতা ট্রাস্ট তহবিল গঠন করে। এই তহবিলের মাধ্যমে ধসে পড়া রানা প্লাজার ঘটনায় হতাহতদের পরিবারগুলোকে অর্থ ও চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। ওই বছরের নভেম্বরে রানা প্লাজা সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করে, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করতে তাদের অন্তত তিন কোটি মার্কিন ডলার অর্থ প্রয়োজন। এ বছর জুন মাসে এসে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করল তহবিলটি।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে নয়তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়লে মোট এক হাজার ১৩৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহত ও পঙ্গু হন প্রায় দুই হাজার মানুষ। ধ্বংসস্তূপ থেকে দুই হাজার ৪৩৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। আহত হন কয়েক হাজার।