খুলনা বিভাগের পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার নিয়ে বিভ্রান্তি
খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান জানিয়েছেন, শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে যানবাহন চলাচল শুরু করবে।
তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক আবদুর রহিম বক্স দুদু মুঠোফোনে জানিয়েছেন, ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়নি। তিনি বলেন, ধর্মঘট শ্রমিক সংগঠন আহ্বান করেছে। সেটি জেলা প্রশাসক প্রত্যাহার করতে পারেন না।
খুলনা জেলা আঞ্চলিক তথ্য অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির ডাকা অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট সন্ধ্যা ৭টা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
খুলনা সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে দুপুর ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ফারুক হোসেন এবং খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বিপ্লব যৌথভাবে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন। এ সময় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) সুবাস চন্দ্র সাহা, খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব হাকিম, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, র্যাব ৬-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নূর-ই-আলম, বাস-মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল গাফ্ফার বিশ্বাস, খুলনা বিভাগীয় ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী মো. সরওয়ার হোসেন, মহিষপুরা-খুলনা আন্তজেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মহাদেব দাস, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজির প্রতিনিধি মো. আবদুল কাদের বেগ উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, ধর্মঘটের কারণে জনগণের ভোগান্তি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি, কৃষিপণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে সভায় আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া সাজাপ্রাপ্ত বাসচালকের বিষয়ে আইনগতভাবে মামলা মোকাবিলা করতে শ্রমিক নেতাদের অনুরোধ জানানো হয়। আলোচনা শেষে মোটর শ্রমিক নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সঙ্গে তাৎক্ষণিক কথা বলে জনস্বার্থে সন্ধ্যা থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহারে সম্মত হন।
এ বিষয়ে জানতে খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন বিপ্লবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
এদিকে, আজ দুপুরের পর কোনো বেসরকারি যানবাহন চলতে দেখা যায়নি। খুলনা নগরীর ফুলবাড়ি গেট, মানিকতলা ও দৌলতপুরে শ্রমিকরা সড়কের ওপর বেঞ্চ দিয়ে অবরোধ করে রাখে। তাদের ধর্মঘটের পক্ষে মিছিল করতে দেখা গেছে। পরিবহন ধর্মঘটে দুর্ভোগে পড়ছে মানুষ। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের হেঁটে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে।