বাল্যবিবাহ নিয়ে বিভ্রান্তি হচ্ছে, ব্যতিক্রম উদাহরণ নয় : চুমকি
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেছেন, ‘কোনো ক্রমেই ১৮ বছরের নিচের কোনো মেয়েকে বিয়ে দেওয়া যাবে না, যা বর্তমান আইনে সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কতিপয় মহল এ বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। প্রতিটি আইনের কিছু ব্যতিক্রম থাকে, ব্যতিক্রম কখনই উদাহরণ হতে পারে না।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭-এর বিশেষ বিধান মেয়েদের সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষার্থে রাখা হয়েছে যা আদালত নিশ্চিত করবে এবং এ বিষয়ে শিগগির বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে। বিধিমালা প্রণয়নের সময় আইনপ্রণেতা এবং সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নেওয়া হবে।
আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০১৭ উপলক্ষে আয়োজিত নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আগামী দুই বছরের মধ্যে বাল্যবিবাহের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭ কার্যকর হলে আাগামী দুই বছরের মধ্যে বাল্যবিবাহের হার অর্ধেকে নেমে আসবে। এ জন্য যা করা দরকার সরকার তা করবে।
মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রেবেকা মমিন, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেগম সাহিন আহমেদ চৌধুরী, ইউএন উইমেন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ক্রিস্টিন হান্টার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, নারী উন্নয়নে বাংলাদেশ একটি রোল মডেল। বিমানের প্যারাস্যুটার থেকে শুরু করে পর্বতের সর্বোচ্চ চূড়ায় আরোহণ, ট্রেনচালক, বিচারপতি, সচিব সব ক্ষেত্রেই নারীর পদচারণা আছে। নারীকে তাঁর যথাযথ মর্যাদা দেওয়ার জন্য সরকার নানামুখী কর্মসূচি নিয়েছে।
‘মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিকভাবে নারীকে ক্ষমতায়নের জন্য দুই কোটি নারীকে ১৮টি ট্রেডে বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কার্যক্রম নিয়েছে এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাদের এককালীন অর্থ দেওয়া হবে।’
প্রতিমন্ত্রী আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধের সহায়তায় প্রচলিত হেল্প লাইন ‘১০৯২১’-কে সংক্ষিপ্ত করে নতুন হেল্প লাইন ‘১০৯’ ঘোষণা করেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পাঁচজন নারীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী শার্লী মেশৌপ্রু, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী হোসনে আরা, সফল জননী হিসেবে মিসেস ফিরোজা বেগম, নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরুর জন্য মর্জিনা বেগম এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় আরিফা ইয়াসমিন ময়ূরীকে জয়িতা পদক দেওয়া হয়। স্বীকৃতি হিসেব তাঁদের দেওয়া হয় একটি সার্টিফিকেট, একটি ক্রেস্ট এবং ৫০ হাজার টাকার চেক।