বিভাগের নাম কুমিল্লাই চান সাক্কু, ২৭ দফা ঘোষণা
বিভাগ হলে এর নাম কুমিল্লাই থাকবে। ‘নাম পরিবর্তনের যে কোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করতে আমরা কুমিল্লাবাসী ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যের নেতৃত্বে থাকবে কুমিল্লা মহানগর। আর তাই আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন হবে কুমিল্লার মর্যাদা রক্ষার নির্বাচন।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্বু ২৭ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ওই ইশতেহারেই তিনি দাবি করেন বিভাগ হলে এর নাম কুমিল্লাই হবে।
এর মাধ্যমে বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকা বিতর্ক আবারও সামনে চলে এসেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগের নাম ‘ময়নামতি’ রাখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, ভবিষ্যতে কোনো জেলার নামে আর বিভাগ হবে না।
এরই প্রতিবাদে কুমিল্লা মহানগরজুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে ওই ইশতেহারের মাধ্যমে বিএনপির প্রার্থী ও সিটির সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু নিজের অবস্থানের কথা জানালেন।
অবশ্য বিভাগের নামকরণ নিয়ে ইশতেহার বা অন্য কোথাও নিজের অবস্থান নিয়ে কিছু প্রকাশ করেননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা।
আজ শুক্রবার বিকেলে নগরীর ধর্মসাগর পাড়ে নির্বাচনী কার্যালয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন মনিরুল হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক, মনিরুল হক চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।
২৭ দফা
ইশতেহারের শুরুতেই মনিরুল হক সাক্কু দাবি করেন, নগরীর জলাবদ্ধতা ও যানজট ‘কিছুটা’ কমেছে। ইশতেহারে বলা হয়, মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে এবং আগামী দু-তিন বছরের মধ্যে তা সম্পন্ন হলে কুমিল্লা শহর জলাবদ্ধতা ও যানজটমুক্ত হবে।
ইশতেহারে জানানো হয়, নগরে নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের কাজ ৭৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আরো দুটি ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘গত পাঁচ বছরে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হয়নি বরং দরিদ্র এবং নানা কারণে পুরো হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
ইশতেহারে জানানো হয়, পুরোনো গোমতী নদীতে ঢাকার হাতির ঝিলের আদলে একটি বিনোদনকেন্দ্র গড়ার লক্ষ্যে জাপানের সরকারি দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে প্রায় ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মনিরুল হক সাক্কু দাবি করেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বেশ উন্নতি হয়েছে, নগরের পরিচ্ছন্নতাও বেড়েছে। এ ছাড়া নারী হোস্টেল বাড়ানো, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর কথাও জানান তিনি।
ইশতেহারে বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও ইভটিজিংয়ের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স নীতিতে অটল আছি এবং থাকব।’ তিনি আরো বলেন, মাদকাসক্তির অভিশাপ থেকে কুমিল্লা মহানগরকে মুক্ত রাখার জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে কাজ করছি।’
আগামী ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত হবে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দ্বিতীয় নির্বাচন। গত ২১ মার্চ আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা নিজের ইশতেহার ঘোষণা করেন।