রাষ্ট্রপক্ষ ও সাঈদীর রিভিউ শুনানি বৃহস্পতিবার
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা রিভিউ শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) হবে।
আজ সোমবার অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। একই দিন খালাস চেয়ে আবেদন করা সাঈদীর রিভিউ আবেদনের শুনানি হবে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।
মামলাটি আজ কার্যতালিকায় ১৪৭ নম্বর ক্রমিকে রাখা ছিল।
২০১৬ সালের ১২ জানুয়ারি সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ড করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। মোট ৩০ পৃষ্ঠার মূল আবেদনে পাঁচটি যুক্তি দেখানো হয়।
একই বছরের ১৭ জানুয়ারি আপিলের রায় থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন করেন সাঈদী। মোট ৯০ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে আমৃত্যু কারাদণ্ড থেকে খালাস পেতে ১৬টি যুক্তি দেখানো হয়।
২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত সাঈদীর রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন। নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে তা পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারে রাষ্ট্র বা আসামিপক্ষ। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালে সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠিত ২০টি অভিযোগের মধ্যে আটটি প্রমাণিত হয়। রায়ের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির। সহিংসতায় প্রথম তিন দিনেই ৭০ জন নিহত হন।
আপিলে ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। ১০ নম্বর অভিযোগ বিসাবালিকে হত্যার, ১৬ নম্বর অভিযোগে তিন নারীকে অপহরণ করে আটকে রেখে ধর্ষণের এবং ১৯ নম্বর অভিযোগ প্রভাব খাটিয়ে ১০০-১৫০ হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করার।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৬, ১১ ও ১৪ নম্বর অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। ৬ নম্বর অভিযোগ লুণ্ঠনের, ১১ নম্বর হামলা ও লুণ্ঠনের এবং ১৪ নম্বর অভিযোগ ধর্ষণের। ৮ নম্বর অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে সাঈদীকে খালাস দেওয়া হয়। একই অভিযোগের অংশবিশেষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে তাঁকে ১২ বছর কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। অষ্টম অভিযোগটি হত্যা ও অগ্নিসংযোগের।
এ ছাড়া সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে ৭ নম্বর অভিযোগে সাঈদীকে ১০ বছর কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ। সপ্তম অভিযোগ নির্যাতন ও বাড়ি লুণ্ঠনের পর অগ্নিসংযোগ। ৮ নম্বর (ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা) ও ১০ নম্বর অভিযোগের (বিসাবালি হত্যা) দায়ে সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।