খাদ্যমন্ত্রী বললেন, আমি কিছু বলব না
ব্রাজিল থেকে আনা গম খাওয়ার উপযোগী বলে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। এমনকি ২১ জুন জাতীয় সংসদে দাবি করেছিলেন, খাদ্য অধিদপ্তরে নিম্নমানের গম আমদানি বিষয়ে যেসব কথাবার্তা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন।
তবে ওই গম মানুষের খাওয়ার উপযোগী কি না, তা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট। গত মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান প্রতিবেদন আকারে জানাতে ওই আদেশ দেন। এরপর থেকে মুখে কুলুপ এঁটেছেন খাদ্যমন্ত্রী।urgentPhoto
খাদ্যমন্ত্রী আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘ন্যাশনাল ফুড প্ল্যান অব অ্যাকশন’ ও ‘ফুড কান্ট্রি প্ল্যান’-এর প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে হাজির হন। সেখানে সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চান গম নিয়ে আগের বক্তব্য ও হাইকোর্টে রিট আবেদনের ব্যাপারে।
খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘হাইকোর্ট যথাযথভাবে অনুধাবন করেছেন বিষয়টি খাদ্য অধিদপ্তরের। আমি বিশ্বাস করি খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইনে নির্দেশ মান্য করবেন। এটা সাব-জুডিস ম্যাটার (বিচারাধীন বিষয়)। এর বেশি আমি কিছু বলব না।’ এর সঙ্গে দুর্নীতির বিষয় আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘আমি কোনো কথা বলব না। এটা সাব-জুডিস বিষয়।’
ব্রাজিল থেকে আমদানি করা গম অত্যন্ত নিম্নমানের- এমন অভিযোগ প্রথম আসে চুয়াডাঙা থেকে, গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে। এর কিছু দিন পরই রাজশাহী পুলিশ থেকে ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়, গমের নিম্নমান প্রসঙ্গে। রাশিয়ার তুলনায় কেজিপ্রতি আট থেকে দশ টাকা বাড়তি দামে কেনা ব্রাজিলের নিম্নমানের গম নিয়ে গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয় সংবাদ। তারই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও খাদ্য সচিবকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গমের মান পরীক্ষার ফলাফল জানাতে বলেন।
ফেব্রুয়ারি-মার্চে গম কাটার মৌসুম হলেও তারও কয়েক মাস পর মন্ত্রণালয় গম সংগ্রহের চাহিদা দিয়েছে। আর এতে নিজ দলীয় ও সমর্থিত লোকদের কাছ থেকে গম সংগ্রহের জন্য মন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া অভিযোগ আছে, দলীয় স্বার্থে বাজারমূল্যের চেয়ে কেজিপ্রতি ১০ টাকা বাড়তি দামে গম সংগ্রহ করে রাষ্ট্রের ক্ষতি করে দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, ‘কোনো মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারে না। সুতরাং কোনো মন্ত্রী যদি তাঁর প্রতিষ্ঠান থেকে জোগান দিতে চান, আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং সরকার সেটা গ্রহণ করে- সেটা সরসরি স্বার্থের সংঘাত হয়ে যাবে। এটা বেআইনি।’