সাকার আপিলের রায় ২৯ জুলাই
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২৯ জুলাই রায় দেওয়া হবে। আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানিতে অংশ নেন।
এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো আপিল বিভাগেও আমরা যথাযথভাবে উপস্থাপন করেছি। আশা করি, তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকবে। আদালতে তাঁর সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকার বিষয়ে আমরা যুক্তি উপস্থাপন করেছি। একাত্তরে তিনি যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তার দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।’
অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘ট্রাইব্যুনালের দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছি। আজ ১৩তম কার্যদিবসে শুনানি শেষে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে। আমরা আশা করি, আপিল বিভাগে তিনি ন্যায়বিচার পাবেন এবং খালাস পাবেন। এর আগে আসামিপক্ষ ট্রাইব্যুনালের রায়, সাক্ষ্য ও জেরা এবং রায়-সংক্রান্ত নথি আদালতে উপস্থাপন করেন। তিনটি কার্যদিবসে রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৯ জুলাই রায়ের দিন নির্ধারণ করা হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধে এটি আপিল বিভাগে আসা পঞ্চম রায়। এর আগে গত ১৬ জুন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
গত ৩০ মে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিলের শুনানি শুরু হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। তাঁর বিরুদ্ধে আনা ২৩ অভিযোগের মধ্যে ১৭টিতে সাক্ষ্যপ্রমাণ হাজির করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর মধ্যে নয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। আটটি অভিযোগ থেকে তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছয়টি অভিযোগের পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো প্রমাণ হাজির না করায় ওই সব অভিযোগ থেকেও তাঁকে খালাস দেওয়া হয়। প্রমাণিত নয়টি অভিযোগের মধ্যে গণহত্যার চারটি অভিযোগে সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এগুলো হলো রাউজানের মধ্যগহিরা, জগৎমল্লপাড়া, রাউজানের ঊনসত্তরপাড়া ও শাকপুরা গ্রামে গণহত্যা। সালাউদ্দিন কাদেরকে তিনটি অভিযোগে ২০ বছর করে ৬০ বছর ও দুটি অভিযোগে পাঁচ বছর করে ১০ বছরসহ মোট ৭০ বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। এসব অভিযোগ থেকে খালাস চেয়ে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আপিল করেন এই বিএনপি নেতা।
হরতালের আগের রাতে গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেপ্তার হন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। এর পর ১৯ ডিসেম্বর তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।