হলি আর্টিজানে হামলা টার্নিং পয়েন্ট : পুলিশ
এক বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনাকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে একটি ‘টার্নিং পয়েন্ট’ মনে করে পুলিশ।
আজ শনিবার সকালে গুলশানের হলি আর্টিজান হামলার এক বছর উপলক্ষে জঙ্গিদের হাতে নিহত সহকর্মী ও দেশি-বিদেশিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে এ মন্তব্য করেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।
পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক বলেন, ‘এ ঘটনার যে ব্যাপকতা তার সঙ্গে আমরা পরিচিত ছিলাম না। সেই অবস্থায় এদেরকে মোকাবিলা করা তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা নিজেদের সীমিত সাধ্যে মধ্যে রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে, দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে হারিয়ে, আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি।’
আজ সকাল থেকে রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের এ রেস্তোরাঁয় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন বিদেশি কূটনীতিক, উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধি, নিরাপত্তা বাহিনী, নিহতদের পরিবারের স্বজনসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সকাল ৮টার কিছু পরে প্রথমে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন, জাপানের রাষ্টদূত মাশাতো ওয়ানাতাবে এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি মিকিও হাতাডেয়া। তারপরই রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুল হাতে শ্রদ্ধা জানাতে আসে হলি আর্টিজানে।
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার সর্ববৃহৎ এ ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ১ জুলাই। হামলা প্রতিরোধের প্রথম প্রহরেই জঙ্গিদের সঙ্গে গোলাগুলিতে ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালাউদ্দিন খান নিহত হন। পরের দিন যৌথ বাহিনী বিদেশি নাগরিকসহ মোট ১৩ জনকে জীবিত এবং মোট ২০ জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘হলি আর্টিজানের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ যাতে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিভাত হতে না পারে তার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি।’
‘রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতা ও পুলিশের প্রফেশনালিজম মিলিয়ে আমরা একটি দৃঢ় পদক্ষেপ নিয়েছি এবং জীবন বাজি রেখে বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। পৃথিবীর বুকে আজ বাংলাদেশে যে জঙ্গিবাদের ঠাঁই নেই, বাংলাদেশ পুলিশ যে সফল হয়েছে, অন্যান্য বাহিনী যে সফল হয়েছে, সেটা পৃথিবীর সব নিরাপত্তা বাহিনী ও সংস্থা একবাক্যে স্বীকার করছে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও আমরা সুফল পাচ্ছি, দেশ তার সুফল পাচ্ছে।’
এ দেশের মুানুষ এখন স্বস্তির মধ্যে আছে, শান্তির মধ্যে আছে উল্লেখ করে পুলিশের এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আমরা মনে করি, অতীতে যেভাবে এগুলোকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি, ভবিষ্যতেও তাদের নির্মূল করতে সক্ষম হব।
মুখলেসুর রহমান আরো বলেন, আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিচরণ সীমিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন দেশে তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। আইএস যোদ্ধাদেরও দিন শেষ হয়ে আসছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের ধারণা, এই উৎপাত শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর বুক থেকে দূরীভূত হবে।