কক্সবাজারে পাহাড় ধসে আরো তিন লাশ উদ্ধার
কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার কবরস্থানপাড়ায় পাহাড় ধসে আরো তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধার হলো। এদের মধ্যে মা-মেয়ে এবং স্বামী-স্ত্রী রয়েছেন। আজ সোমবার সকালে ফায়ার সার্ভিস, ১৬ ইসিবির সেনা সদস্যসহ স্থানীয়রা মাটি সরিয়ে এসব মৃতদেহ উদ্ধার করে।
urgentPhoto
নিহতরা হলো জুনু বেগম (২৮) ও তার শিশু মেয়ে নীহা মনি (৬)। পরে উদ্ধার কর্মীরা শাহ আলম, তাঁর স্ত্রী রোকেয়া ও রিনার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
কয়েক দিনের টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে শহরের বাহারছড়ার কবরস্থানপাড়ায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ছয়টি বাড়ি বিধস্ত হয় মাটি চাপা পড়ে।
এদিকে, রামুতে ঢলের পানিতে ভেসে গেছে দুজন। সেন্ট মার্টিনসে ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে নিখোঁজ রয়েছে মাছ ধরার নৌকাসহ ছয় মাঝিমাল্লা। বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা গেছেন এক জেলে। জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ১০ মাঝিমাল্লাকে। জেলায় দেড় শতাধিক গ্রামের তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক যোগাযোগ দ্বিতীয় দিনের মতো বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে এসব এলাকায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
এদিকে পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে রামু উপজেলার রাজার কুল গ্রামের ছিদ্দিক আহমদের ছেলে আব্দুস সালাম (১৮) ও কচ্ছপিয়া গ্রামের ১৩ দিনের নবজাতক পানিতে ভেসে গেছে। বন্যায় চকরিয়া, রামু, পেকুয়া, কক্সবাজার সদর ও টেকনাফের পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। দুর্গত এলাকার লোকজন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
এসব এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বন্যাকবলিত এলাকা দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবির জানান। তবে এখনো দুর্গত এলাকায় কোনো ধরনের ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত মাতামুহুরী নদীর তিনটি পয়েন্ট যথাক্রমে সওদাগর ঘোনা, কন্যার কুম এবং পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত বিশাল বেড়ীবাঁধ গতকাল দুপুরে ঢলের পানির তোড়ে ভেঙে যায়। বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের চারটি পয়েন্ট দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
গত রমজান মাসে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সপ্তাহব্যাপী পানিবন্দি থাকার পর হঠাৎ করে আবার বন্যা দেখা দেওয়ায় মহা দুর্ভোগে পড়ে দুর্গত এলাকার মানুষ।