কোমেন স্থির
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম বলেছেন, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকাতেই স্থির রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর আবহাওয়া অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শাহ আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি বর্তমানে স্থির অবস্থায় অবস্থান করছে। সন্ধ্যার পর উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পরে বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এটি একটি দুর্বল ঘূর্ণিঝড়। এর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার হতে পারে। পূর্ণিমার সঙ্গে জোয়ার আগামীকাল পর্যন্ত থেকে যাবে।’
ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে যাচ্ছে বলা যায় কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শাহ আলম বলেন, এটি বলা যায় না। ঘূর্ণিঝড়টি স্থির হয়ে আছে। ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে না পারলে বৃষ্টি ঝরিয়ে থেমে যাবে।
ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য জনগণের জানমাল রক্ষা করা। সরকার এত ছোট ঘূর্ণিঝড়ের জন্য যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে তেমন কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা নেই।’ তিনি আরো বলেন, ‘যদি বাতাসের গতিবেগ ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার অব্যাহত থাকে, তাহলে জলোচ্ছ্বাস বেড়ে যেতে পারে।’
ঢাকায় কোমেনের প্রভাব পড়বে কি না—জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, বিকেলে কিছু বৃষ্টি হতে পারে। তবে বেশি না। রাতে বেশি হতে পারে। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হচ্ছে পতেঙ্গা ও রাঙামাটিতে, ৪৮ মিলিমিটার। বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কোমেন সকাল থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০৫ কিলোমিটার পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে (২১ দশমিক ৯ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১ দশমিক ৪ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ)। এটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে সন্ধ্যায় বিকেলে চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও দ্বীপগুলো এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত এবং মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা এবং জেলাগুলোর কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
উপকূলীয় জেলা বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং কাছাকাছি দ্বীপ ও চরগুলো ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।