আমি যখন ধরি ভালো করেই ধরি
চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে গডফাদারদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গডফাদার কাকে বোঝাচ্ছেন তা জানি না। কিন্তু যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জলপথ, নৌপথ সব পথে নজরদারি চলছে। আমি যখন ধরি তখন ভালো করেই ধরি। কে কার ভাই, কার বোন তা দেখি না।
আজ বুধবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গত ২৫ মে ও ২৬ মে-এর ভারত সফর নিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
রোহিঙ্গা ইস্যু ও তিস্তা পানি চুক্তি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিস্তা নিয়ে, সব কিছু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এবার আমি গিয়েছি বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন করতে। তাই সেটিকেই জোর দিয়েছি। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের আশ্বাস দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য যথেষ্ট রিলিফ পাঠিয়েছে ভারত।
মাদকবিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু মাদকবিরোধী অভিযান থেমে থাকুক সেটি কি আপনারা চান? মাদকবিরোধী অভিযান এটি সবার দাবি। আপনারা শুধু অভিযানে কারা নিহত হলো সেটি দেখান। কিন্তু সাত হাজারের ওপর গ্রেপ্তার হয়েছে সেটি তো কেউ দেখান না। মাদকবিরোধী অভিযান বন্ধ হোক সেটা কি চান?। মাদক বন্ধ হলে সমাজ ভালো থাকবে। আজকে মাদকের কারণে ভাই তার বোনকে এবং ছেলে তার মাকে হত্যা করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুবই স্বাভাবিক একটি বড় ধরনের অভিযান চললে কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন কোনো অভিযানে যায় তখন তাদের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে সেটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নিরীহ মানুষ শিকার হয়েছে সেটি দেখান। দেখাতে পারলে আমি এর বিচার করব।
মাদকের গডফাদারদের গ্রেপ্তার নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, গডফাদার আপনারা কাকে বলছেন সেটি আমি জানি না। কাকে আপনার গডফাদার হিসেবে বিবেচনা করছেন সেটা আপনারা ভালো জানেন। কে গডফাদার সেটি দেখা হচ্ছে না। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। কে গডফাদার, কে এর বিস্তারকারী, কার সহযোগিতায় এটি হচ্ছে এসব বিষয়ে দীর্ঘদিন খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে। হুট করেই এ অভিযান শুরু করা হয়নি। আপনাদের মনে হতে পারে, হুট করে এ অভিযান শুরু হয়েছে। জলপথ, নৌপথ সব পথে নজরদারি চলছে। আমি যখন ধরি তখন ভালো করেই ধরি। কে কার ভাই, কার বোন তা দেখি না।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুই দিনের সরকারি সফর শেষে গত ২৬ মে রাতে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে গত ২৫ মে সম্মানিত অতিথি হিসেবে তিনি শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দেন। বিশ্বভারতীতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে নির্মিত ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। সেখানে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করেন তাঁরা। ২৬ মে পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি লিট ডিগ্রি গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা।
দেশে ফেরার আগে কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনিন। এ ছাড়া, প্রধানমন্ত্রী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করেন।