একরাম আমাদের কর্মী, শিকার হলো কি না …
মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সঙ্গে তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর একরামুল হকের পরিবারের সরবরাহ করা অডিও ক্লিপটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য এলো।
আজ শনিবার ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই একরামের ব্যাপারটা… সে আমাদের পার্টিরই একজন কর্মী। এখানে কি সে ভিকটিম হয়ে গেল, অসহায় ভিকটিম- এটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের অভিযানে দু-একটা ভুল হতে পারে। আমি জানি না খতিয়ে দেখার আগে। এ বিষয়টাতে… এটা কোনো নিরীহকে শিকার করা হলো কি না?’
‘সেই বিষয়টা ইনভেস্টিগেশনের পরে বেরিয়ে আসবে, তথ্য-প্রমাণসহ। তার আগে তো আমি কিছু বলতে পারছি না। যদি কোনো নিরীহ ব্যক্তি হয়রানি হামলার শিকার হন তাহলে অবশ্যই সরকার কাউকে ছাড় দেবে না। এটা প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন’, যোগ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।
গত বৃহস্পতিবার কক্সবাজার প্রেসক্লাবে নিহত একরামুল হকের পরিবার সংবাদ সম্মেলনে করে তিনটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ করে। এরপর গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে করা প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিকেলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘একরামুলের পরিবারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা অডিও ক্লিপটি আমরা শুনেছি। সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ সময় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের আটকের পাশাপাশি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনাও ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী।
এই অভিযানের মধ্যেই র্যাবের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, গত ২৬ মে দিবাগত রাতে টেকনাফের বাহারছড়ার নোয়াখালীয়াপাড়া সংলগ্ন মেরিন ড্রাইভ সড়কে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক নিহত হয়েছেন। র্যাবের আরো দাবি, তিনি তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী।
তবে পরিবারের পক্ষ থেকে টেকনাফ পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল নির্দোষ ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে। পরিবার এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তও দাবি করেছে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেছে একরামের পরিবার।
এর মধ্যেই আজ সকালে রাজধানীতে নারীদের জন্য বেসরকারি উদ্যোগে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করতে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের আলোচিত এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। এ সময় তিনি আশ্বস্ত করেন, মাদকবিরোধী অভিযানে কোনো নিরীহ ব্যক্তি হয়রানির শিকার হলে তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলমান এই মাদকবিরোধী অভিযানকে সাধারণ মানুষ সমর্থন করছে এবং অভিযানে সরকারকে সফল হতেই হবে- এমন মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের অভিযোগ করেন, ‘সবাই যখন এই অভিযানকে সমর্থন যোগাচ্ছে তখন একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী অযথা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।’
মাদক দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিয়ে পুরো জাতির ভবিষ্যতকে হুমকির সামনে ফেলে দিয়েছে। সরকারের এই অভিযান শুরু করা ছাড়া উপায় ছিল না বলেও জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
‘শুধু মৌখিক ক্যাম্পেইনে এই ভয়াবহ প্রবণতা, যে স্রোত ইয়াবার, এই স্রোতকে দমানো যাচ্ছিল না। আজকে যারা সমালোচনা করে, প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, তারা কিন্তু একটি কথাও উচ্চারণ করেনি। তারা মাদক নিয়ে কোনো কথাই… রাজনীতি ছাড়া এ দেশে কী আমাদের আর কিছু বলার নেই?’, যোগ করেন সেতুমন্ত্রী।
রাজধানীতে নারীদের চলাচলের জন্য বাস 'দোলনচাঁপা' নিয়ে এসেছে র্যাংগস গ্রুপ। প্রাথমিকভাবে মিরপুর পল্লবী থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এই বাস চলাচল করবে। নারীদের জন্য বেশ কিছু বিশেষ সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এই বাসে কনডাকটরও থাকছে নারী।
এর আগে রাষ্ট্রায়ত্ত পরিবহন সংস্থা বিআরটিসি মহিলা বাস চালু করলেও বেসরকারী উদ্যোগে 'দোলনচাঁপা' প্রথম। প্রাথমিকভাবে 'দোলনচাঁপা'র সেবা ১০টি বাস নিয়ে চালু হলেও খুব শিগগির আরও ৫০টি বাস রাস্তায় নামবে। চালু হবে নতুন নতুন রুট।