খুলনার নিহত শিশু রাকিবের বোনকে অপহরণের চেষ্টা
খুলনায় মলদ্বার দিয়ে বাতাস ঢুকিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা শিশু রাকিবের একমাত্র বোনকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় অপহরণের চেষ্টা করার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
urgentPhoto
রাকিবের বাবা নূরুল আলম জানান, আজ শিশু রাকিব হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের নির্ধারিত দিন ছিল। হত্যাকারীদের যথাযথ বিচারের দাবিতে বেলা ১২টার দিকে টুটপাড়া এলাকাবাসীর ব্যানারে একটি মিছিল বের করা হয়। এই মিছিলে তিনিসহ তাঁর স্ত্রী লাকি বেগম ও তাঁদের একমাত্র মেয়ে রিমিও (৭) যোগ দেয়। পরে মিছিল নিয়ে তাঁরা আদালতে সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। এই সময় শিশু রিমিকে চকলেট দিয়ে তাকে ফুসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কয়েকজন ব্যক্তি। এতে রিমি চিৎকার করে উঠলে আশপাশের লোকজন দুই ব্যক্তিকে আটক করে পিটুনি দেয়। এরপর দুজনকেই পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তবে অপহরণের চেষ্টা করা এক ব্যক্তি পালিয়ে যায়।
রাকিব হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা মডেল থানার উপপরিদর্শক কাজী মোসতাক আহমেদ জানান, এ ঘটনায় রাকিবের বাবা বাদী হয়ে একটি অপহরণ মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে আটক দুই ব্যক্তিসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হবে।
আটক দুই ব্যক্তির পরিচয় জানতে চাইলে উপপরিদর্শক জানান, এদের একজনের নাম নাসরিন বেগম (৩২)। তিনি রাকিব হত্যার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি মিন্টু খানের বোন। অপরজন হলেন নাসরিনের স্বামী আবুল কালাম আজাদ ( ৪০)।
খুলনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস জানান, আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তার জন্য এক প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশু রাকিবের পরিবারকেও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে রাকিব হত্যা মামলার তিন আসামির জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ দিলরুবা সুলতানা পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য ৫ অক্টোবর পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার আইনজীবী মোমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আজ দুপুরে বিচারক দিলরুবা সুলতানা বিচারকাজ শুরু করলে মামলার তিন আসামির উপস্থিতিতে তাঁদের পক্ষে জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী চৌধুরী তৌহিদুর রহমান তুষার। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুলতানা রহমানসহ একাধিক আইনজীবী এই জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। পাশাপাশি অভিযোগ গঠনের জন্য নতুন দিন ধার্য করেন।
এদিকে খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফা কামাল জানান, শিশু রাকিব হত্যা মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে পাঠানোর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি গ্রহণ করে মামলার কিছু তথ্য জানতে চিঠি দিয়েছেন। যেহেতু মামলার সব আসামি গ্রেপ্তার আছে সেহেতু দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে গেলে বিচারকাজ দ্রুত শেষ হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।