আজ বিকল্পধারার সঙ্গে সংলাপ, কী হবে
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু হয়েছে। প্রথম দিন গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংলাপে অংশ নিয়েছেন বিএনপিসহ চারটি রাজনৈতিক দলের মোর্চা আলোচিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের সঙ্গে গণভবনে সংলাপে বসবে সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা।
এই সংলাপকে ঘিরে এরই মধ্যে সারা দেশে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের নির্বাচনী হাওয়া লেগেছে। বিশেষত নির্বাচন, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, নির্বাচনী পরিবেশসহ অন্যান্য বিষয় ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে যে রাজনৈতিক সংকট বিরাজ করছে সরকার ও রাজপথে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে; সংলাপের মধ্য দিয়ে সেই সমস্যা সমাধানের পথ বের হবে কি না—সে প্রশ্নই ঘুরেফিরে আসছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
গতকাল রাতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের নেতারা গণভবনে সংলাপে অংশ নিয়েছেন।
সেই সংলাপ থেকে বেরিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ সময় আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার বিষয় তুলে ধরে তাঁর মুক্তির দাবিও করেছি। কিন্তু সে বিষয়ে আমরা সেখানে কোনো সদুত্তর পাইনি।’
বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘সংসদ ভেঙে দেওয়াসহ আমাদের দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু সেখানে কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো সমাধান পাইনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এসব বিষয় নিয়ে আরো আলোচনা হবে।’
অন্যদিকে ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আমরা তিন ঘণ্টা গণভবনে ছিলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত টানা আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সংলাপের শুরুতে লম্বা বক্তব্য দিয়েছেন; কিন্তু আমরা সেখান থেকে কোনো সমাধান খুঁজে পাইনি।’
তবে আজ শুক্রবার মুন্সীগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রথম দিনের সংলাপে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। চাইলে ছোট পরিসরে আবারও সংলাপ হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর দরজা সবার জন্য সব সময় খোলা।’
বিএনপি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘটে। নতুন জোটের সাত দফা দাবির মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন ও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার নিশ্চয়তা প্রদানের কথাও বলা হয়েছে। এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের সঙ্গে সংলাপ হয় ঐক্যফ্রন্টের।
এর পর ৫ নভেম্বর সংলাপ হবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার।