নির্বাচন বানচাল করার আগ্রহ সরকারের : নজরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘নির্বাচন বানচাল করার আগ্রহ সরকারের। যেন তারা আরো পাঁচ বছর ভোট ছাড়া ক্ষমতায় যেতে পারে সে ব্যবস্থা করছে। আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্বাচন। জনগণ যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে। তাতে নৌকায় ভোট দিলেও আমাদের কোনো কথা নেই।’
আজ বুধবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের এক জরুরি বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘১৬-১৭টি আসন আমাদের প্রার্থীবিহীন করা হলো। এর মাধ্যমে এই আসনগুলো সরকারকে উপহার দিল সংশ্লিষ্টরা। আজকেও তিনজনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা-৪ আসন ও নাটোর ৪-এর প্রার্থী রয়েছে। নরসিংদী-৩ আসনের মনজুর এলাহির প্রার্থিতা বাতিল করা হয় উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ গৃহীত না হওয়ায়। এ রকম ১৬-১৭টি আসন প্রার্থীশূন্য করা হয়েছে।’
নজরুল বলেন, ‘আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ছিল নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে এবং সিইসি তাতে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু আমরা ক্ষোভের সঙ্গে দেখলাম, বিরোধী দলের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ, মামলা, হামলা, বাধা দেওয়া চলছে এবং ক্রমাগত তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
নজরুল আরো বলেন, ‘এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের না, নারীদের পক্ষেরও না, ধর্মনিরপেক্ষও না। এসব তাদের মুখের কথা, ভোটের কথা। এই নির্বাচনে আমাদের বহু মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর তারা হামলা করেছে। এই সরকার বলে তারা নারীদের সম্মান করে, অথচ আমাদের নারী প্রার্থীদের ওপর হামলা করেছে। তারা বলে তারা ধর্মনিরপেক্ষ, আর গতকাল তার প্রমাণ দিয়েছে আমাদের গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আহত করে। তারা ক্ষমতালোভী একটি দল মাত্র। তারা নারীদের পক্ষেও না, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও না, ধর্মনিরপেক্ষও না।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘হামলা, বাধা ও আক্রমণ বিষয়ে আমরা সিইসির সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। তাঁকে বলেছি, এখন দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মানুষ আপনি। আপনি ইচ্ছা করলে ব্যবস্থা নিতে পারেন, এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। কিন্তু তিনি আক্রমণকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। আজকে আমরা ২০ দল থেকে বলছি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে অক্ষম ও অনাগ্রহী। যিনি আক্রমণকারীদের পক্ষ নেন, তাঁকে দিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সে কারণে তাঁর পদত্যাগ দাবি করছি। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক একজন যোগ্য কমিশনার নিয়োগ দেওয়ারও দাবি করছি।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এত কিছুর পরও আমরা নির্বাচনে আছি। নির্বাচন বর্জন না করে বা বানচাল করে আমাদের লাভ কী? আমরা কোন আনন্দে নির্বাচন বানচাল করতে যাব ?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সারা দুনিয়ায় যে সুনাম আছে, তারা নিজ দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করে সেই সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখবে বলে প্রত্যাশা করি।’
সরকারের উদ্দেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এভাবে গায়ের জোরে ক্ষমতায় এসে কী হবে? এ রকম কত এমপি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কথা মানুষ ভুলে গেছে। হয়তো জিতবেন। তাতেই কি সব শেষ হয়ে যাবে? আমরা না জিতলে কি সবকিছু শেষ হয়ে যাবে? জনগণ সব দেখছে। সরকার যে গণতন্ত্রকে তার সঠিক জায়গায় রাখছে না তার ফলাফল ভবিষ্যতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বলতে পারছি না।’