সংলাপ নিয়ে আ. লীগের কটাক্ষে দেশবাসী হতাশ : বিএনপি
সংকট কাটাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জাতীয় সংলাপের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ‘কটাক্ষে’ দেশবাসী ‘হতাশ ও বিস্মিত’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। আজ রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপাসনের জাতীয় সংলাপের বিষয়টি উল্লেখ করে দলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয় শাসক দলের কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এই প্রস্তাবনাকে কটাক্ষ করেছেন। আমাদের দল ইতিবাচক রাজনীতি করে বলেই-দেশ ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই জাতীয় ঐক্যের স্বার্থেই জাতীয় সংলাপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সরকারপ্রধান বিদেশ থেকে দেশে ফিরেই তাঁর মন্ত্রীদের কথাই পুনরুচ্চারণ করেছেন- যা দেশবাসীকে সত্যিই হতাশ ও বিস্মিত করেছে।’
গত ৫ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন চলমান রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলায় জরুরি জাতীয় সংলাপের আহ্বান জানান। এ সময় তিনি বলেন, ‘সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দেশের এই ক্রান্তিকালে সংকট উত্তরণে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রকে সংকোচন না করে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে একটি জাতীয় সংলাপের সূচনার পরিবেশকে উন্মুক্ত করবে দেশ ও জাতির স্বার্থেই।’
এর জবাবে পরের দিন ৬ নভেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্য ও সংলাপের আহ্বান নাকচ করে দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘সেই যোগ্যতা তাদের নেই। যাদের আন্দোলন করার শক্তি নেই, তারা কীভাবে সরকার পরিবর্তন করতে চায়।’
এ সব বিষয় উল্লেখ করে আজ বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘দম্ভ ও উন্মাষিকতা থেকেই তাঁরা এসব বলছেন, তাতে কারো কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তাঁদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, ভোটবিহীন নির্বাচনে গঠিত সরকারের মন্ত্রীদের মুখে এসব বাগাড়ম্বর মোটেই শোভা পায় না।’
“অর্থমন্ত্রী বিএনপির সংলাপ প্রস্তাবকে ‘রাবিশ’ বলেছেন। তাঁর অদক্ষতা-অযোগ্যতা ও শাসকদলীয়দের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার নামে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলো থেকে ১০ হাজার কোটি টাকার মতো লোপাট হয়ে ওসব ব্যাংক এখন ফোকলা হয়ে গেছে। তাঁর মতো এরশাদ স্বৈরাচারের একজন সহযোগীর মুখেই এ ধরনের অমার্জিত শব্দ উচ্চারণ হওয়া স্বাভাবিক।”
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে সংলাপের আহ্বান জানানো বিরোধী দলের কোনো দুর্বলতা নয়। সরকারের সৌভাগ্য যে, বিরোধী দলের ওপর নির্মম-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানোর পরও আমরা এই ভোটারবিহীন নির্বাচনে গঠিত সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসার প্রস্তাব দিয়েছি, শুধু দেশ-জাতি যাতে অমানিশার ঘোর অন্ধকারে নিপতিত না হয়।’
‘আমরা দেশকে বাঁচাতে চাই, জনগণকে বাঁচাতে চাই। এখানে ক্ষমতায় কে আছে, ক্ষমতায় কে আসবে এখন সেটা মুখ্য নয়। দেশকে বাঁচাতে হলে অবশ্যই সর্বদলীয় বৈঠক করতে হবে, জাতীয় ঐক্যের সূচনা করতে হবে, সংলাপও হতে হবে।’
বিএনপি মুখপাত্র আরো বলেন, “যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধী অপরাধের সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানের বিচার চাই এবং এ প্রশ্নে আমাদের সমর্থন রয়েছে, তারপরও নিছক রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে শাসকদল এক ধরনের ‘গোয়েবলসীয়’ প্রোপাগাণ্ডা অব্যাহত রেখেছে।”