ভয়ে পালিয়ে নয়, কাজের জন্য গিয়েছি : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী জবাবদিহিতার ভয়ে সংসদ থেকে পালিয়ে গেছেন সংসদ সদস্যদের এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘আমাদের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে করতে ৬টা বেজে যায়। আর মন্ত্রণালয়ের কাজ শুরু করতে হয় ৬টা থেকে। ১০টার পর বাসায় ফিরি। আসলে আমি ওই দিন কাজের জন্যই গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে কেউ কেউ বলেছেন আমি নাকি পালিয়ে গেছি।’
আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে দশম সংসদের অষ্টম অধিবেশনে ৩০০ বিধিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী। এ সময় তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধের পরিপত্র জারি করাকে শিক্ষানীতির বাইরে কোনো কিছুই করা হয়নি বলেও জানান।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষানীতির বাইরে কোনো কিছুই করি নাই। যা আপনারা পাস করে দিয়েছেন তাই আমরা কার্যকর করছি মাত্র। যদি আমাদের কোনো ভুল-ত্রুটি থাকে তাহলে অবশ্যই আপনারা দেখবেন এবং সে অনুসারে ব্যবস্থা নেবেন।’
‘আমি আর কথা বাড়াতে চাই না। আমি আশা করি, আমরা শিক্ষানীতির মধ্যেই আছি। এটাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যই আমরা অর্জন করতে চাই।’
শিক্ষানীতির ফাইলটি হাতে নিয়ে সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘আশা করি, আপনারা একবার এই ফাইলটা পড়বেন এবং দেখবেন।
‘শিক্ষানীতিতে রয়েছে সরকারি কর্মকমিশনের আদলে একটি বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষানীতিতে যা উল্লেখ করা আছে আমরা হুবহু তা বাস্তবায়ন করছি। এই নীতি জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আপনাদের সবার অনুমোদনক্রমেই এটা হয়েছে। এটা কাউকে বঞ্চিত করার জন্য নয়, বরং শিক্ষানীতি বাস্তবায়নেরই একটি পর্যায়। সবাই আমাকে যে অপবাদ দিয়েছেন সেটা আসলে ঠিক নয়।’
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, পিএসসির অনুরূপ যে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে তা ভালো শিক্ষক নিয়োগের জন্যই করা হয়েছে। আপনারা যদি শিক্ষানীতিটা পড়েন, আশা করি এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকবে না। শিক্ষার মান বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিতে হবে ভালো শিক্ষকের ওপর। কারণ ভালো শিক্ষকই ভালো ছাত্র তৈরি করতে পারে। ভালো মানের শিক্ষার জন্য স্কুল, কলেজ বা বই খাতা না থাকলেও চলে, কিন্তু ভালো শিক্ষক না থাকলে চলে না। আর আমরা ভালো শিক্ষক নিয়োগের বিষয়েই গুরুত্ব দিয়ে এটা করেছি।’
জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনের একটি দাবি ছিল উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের দাবি ছিল, একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রণয়নকৃত সেই খসড়া শিক্ষানীতি যখন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছিল তখন এর বিরোধিতা কেউ করে নাই। এমনকি কোনো ব্যক্তি বা দলও এটিতে দ্বিমত পোষণ করে নাই। ফলে সবার সম্মতিক্রমে এটা অনুমোদন হয়েছে। সেই শিক্ষানীতির ওপর ভর করেই বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে।
সংসদ সদস্যদের আপত্তির প্রসঙ্গে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, সব সংসদ সদস্য মিলে বর্তমানে সর্বোচ্চ তিন হাজারটি শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে রয়েছেন। কিন্তু মোট বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩৬ হাজার ৭১টি। তাহলে বাকি যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সেগুলোর সভাপতি অন্যরা। আমরা যেটা করেছি, সেটা কাউকে বাতিল করার উদ্দেশ্যে নয়। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্যই এটা করা হয়েছে।