বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যার দায় মুজাহিদের
মুক্তিযুদ্ধের সময় আলবদর ও ছাত্রসংঘের নেতা হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যা সংঘটিত করেন ফাঁসিতে ঝোলা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ।
একাত্তরের ২৭ মার্চের পর ঢাকার মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প করে। পরে রাজাকার, আলবদর বাহিনীও সেখানে ক্যাম্প করে। মুজাহিদ ছাত্রসংঘের শীর্ষ নেতা হওয়ার সুবাদে আর্মি ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ছাত্রসংঘের ও আলবদর বাহিনীর সুপিরিয়র নেতা হিসেবে আর্মি ক্যাম্পে উপস্থিত ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে স্বাধীনতাবিরোধী নানা অপরাধের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র করতেন। এ ধরনের পরামর্শ ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুজাহিদ ১০ ডিসেম্বর থেকে পরিচালিত বুদ্ধিজীবী নিধনসহ হত্যা, নির্যাতন, বিতাড়নের মতো যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা সংঘটিত করেন।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। এ ঘটনায় ২০১১ সালের ২১ জুলাই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন কর্মকর্তারা।
ওই বছরই ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে ২০১২ সালের ২১ জুন মুজাহিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট সাতটি অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। নির্যাতনের অভিযোগে ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১১ আগস্ট আপিল করেন মুজাহিদ।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে মোট সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছিল। সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটিতে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি দুটি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
গত ১৮ নভেম্বর আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।