নিজামীর আপিলের সারসংক্ষেপ জমার নির্দেশ
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মামলার আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষকে ৩১ মার্চের মধ্যে এই সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলা হয়েছে। আদালত বলেন, এ সময়ের মধ্যে সারসংক্ষেপ জমা না দিলে ধরে নেওয়া হবে, শুনানির জন্য উভয় পক্ষ প্রস্তুত রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মামলাটি আজ কার্যতালিকায় ছিল। আদালত ৩১ মার্চের মধ্যে সারসংক্ষেপ জমা দিতে বলেছে। অন্যথায় শুনানির জন্য উভয় পক্ষ প্রস্তুত রয়েছে ধরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আদালত।
আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় মামলাটি দুই নম্বরে ছিল। সেখানে লেখা ছিল, ‘মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বনাম চিফ প্রসিকিউটর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।’
আদালতে নিজামীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট-অন-রেকর্ড জয়নুল আবেদীন ও অ্যাডভোকেট শিশির মোহাম্মদ মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর আপিলের শুনানির জন্য তিনবারের মতো নিজামীর মামলাটি কার্যতালিকায় এলো।
গত বছরের ২৩ নভেম্বর মোট ১৬৮টি যুক্তি দেখিয়ে এই আপিল আবেদন করেন নিজামীর আইনজীবীরা। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর ওই রায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মতিউর রহমান নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দেন। তাঁর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন মতিউর রহমান নিজামী।
এর আগে ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের একটি মামলায় মতিউর রহমান নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনাল। ২৮ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগ আমলে নেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, লুট, ধর্ষণ, উসকানি ও সহায়তা, পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার ১৬টি অভিযোগ আনা হয়। আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর মোট চারটি অভিযোগে তাঁকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়েছে। প্রমাণিত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে হত্যা, বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণ, দেশত্যাগে বাধ্য করা, নির্যাতন ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায়ও নিজামীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।