প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্য, দুই মন্ত্রীকে আইনি নোটিশ
প্রধান বিচারপতি এবং বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ সোমবার ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী জুনু এ নোটিশ পাঠান।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই মন্ত্রীকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৪-এর অনুচ্ছেদের ৪ নম্বর উপধারায় বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকাজ পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকবেন। মন্ত্রীর নির্দেশনামূলক বক্তব্য সরাসরি বিচার বিভাগ এবং প্রধান বিচারপতির বিচারিক ক্ষমতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল। তাই দুই মন্ত্রীর বক্তব্য সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অসাংবিধানিক ও আদালত অবমাননার শামিল।’
নোটিশে আরো বলা হয়, ‘এসব বক্তব্যের মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগে বিচারাধীন রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন। রায় প্রকাশের আগেই কোনো মামলায় আদালত কী রায় দেবেন, তার নির্দেশনামূলক বক্তব্যের মাধ্যমে আপনারা অনুরোধ করেছেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি, সংবিধান পরিপন্থী ও আদালত অবমাননার শামিল। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রধান বিচারপতিকে আপনারা বিচারাধীন মামলা থেকে সরে নতুন বেঞ্চ গঠন এবং পদত্যাগের দাবি করেছেন, যা সরাসরি আদালত অবমাননার শামিল। তাই আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দিতে আহ্বান করছি। তা না হলে উচ্চ আদালতে এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মীর কাসেম আলীর আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের সমালোচনা করে গত শনিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে বক্তব্য দেন সরকারের দুই মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রধান বিচারপতি তাঁর আসনে থাকতে চাইলে ‘অতিকথন’ বন্ধ করা উচিত বলেও সে সময় এক মন্ত্রী পরামর্শ দেন।
একই সঙ্গে মীর কাসেম আলীর মামলায় আপিল বিভাগের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে ওই মামলায় পুনরায় শুনানি করার আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী।