আদালতের ওপর চাপ ছিল না : আইনমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায়ের বিষয়ে আদালতের ওপর সরকারের চাপ ছিল না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ‘আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং স্বাধীনভাবেই বিচার নিষ্পত্তি করে এই রায় দিয়েছেন।’
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আনিসুল হক বলেন, ‘আগে যেসব রায় দেওয়া হয়েছিল, তাতে আমরা সন্তোষ প্রকাশ করেছি। বরাবরের মতো এই রায়টিতেও আমরা সন্তুষ্ট। সরকার যুদ্ধাপরাধের বিচারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমরা এই বিচার করে যাচ্ছি এবং কাঙ্ক্ষিত ফল পাচ্ছি।’
প্রধান বিচারপতি ও বিচার বিভাগ নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীকে সর্বোচ্চ আদালতে তলব প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা এখন বিচারাধীন বিষয়। তাই এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করব না।’
দুই প্রভাবশালী মন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে জড়িয়ে যে উক্তি করেছেন, সেটি রায় আদায়ে আদালতের ওপর সরকারের চাপ কি না—তা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আদালতের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আদালতের কার্যক্রমে সরকার কখনোই চাপ সৃষ্টি করে না। মন্ত্রীরা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তাঁদের নিজস্ব বক্তব্য।’
আদালত এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছেন বলেও মন্তব্য করেন আনিসুল হক।
রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আইন অনুযায়ী আসামিপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করার জন্য ১৫ দিন সময় পাবেন। এটা আসামির অধিকার। রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন করলে সেটার বিপক্ষে আইনিভাবে লড়বে রাষ্ট্রপক্ষ। আর তা না করা হলে নিয়ম অনুযায়ী রায় কার্যকরের পদক্ষেপ নেবে সরকার।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় বহাল রাখেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন—বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
মুক্তিযুদ্ধের সময় কিশোর জসিমসহ ছয়জনকে হত্যার দায়ে মীর কাসেমকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এ ছাড়া আজ রঞ্জিত দাস, টুন্টু সেন হত্যার দায় থেকে মীর কাসেম আলীকে খালাস দেওয়া হয়েছে।