দলীয় প্রতীক ইউপি নির্বাচনে প্রাণহানির জন্য দায়ী নয়
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক সংঘাত, সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার জন্য দলীয় প্রতীক দায়ী নয় বলে মনে করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘কেউ যদি বলেন দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করায় সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, আমি বলব তিনি মোটেই ঠিক বলেননি। প্রাণহানির জন্য স্থানীয় কোন্দল ও ব্যক্তিগত রেষারেষিই দায়ী। এসব ঘটনা আমাদের উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না।’
আজ বিকেলে মুঠোফোনে এনটিভি অনলাইনকে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, ‘দেশের বিকাশমান গণতন্ত্রকে তৃণমূল পর্যায়ে এমনকি প্রতি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার মহৎ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমাদের এ উদ্যোগ যাতে সফল না হয়, সে জন্য একটি মহল শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছে। প্রাণহানি ও সহিংসতার পেছনে তাদের হাতও থাকতে পারে।’
বিএনপির সমালোচনা করে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের অন্যতম এ উদ্যোক্তা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে তৃণমূলের সরাসরি অংশগ্রহণ হয়ে থাকে। এ কারণে এ ধরনের নির্বাচনগুলোতে মারামারি ও সংঘাতের মতো ঘটনা আগেও ঘটেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম আমরা দেখছি না। কিন্তু এ নিয়ে বিএনপি তাদের পুরোনো অভ্যাস অনুযাযী দোষারোপের রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট সুপারিশ বা বক্তব্য আমরা পাইনি। বিএনপি চাচ্ছে মূলত টোটাল নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভণ্ডুল করতে।’
বিএনপি তো নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছে। তাদেরকে নির্বাচনে ধরে রাখার কোনো উদ্যোগ সরকার নেবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে এলজিআরডিমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর যেমন পূর্ণ অধিকার রয়েছে, আবার নির্বাচন অংশগ্রহণ না করার অধিকারও রয়েছে। নির্বাচনে না এলে যে কি ক্ষতি হয়, সেটা বুঝেই তো তারা নির্বাচনে এসেছে। আমরা সবাইকে নিয়েই শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই।’
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক পরিচয় দলীয় প্রতীক ব্যবহার হচ্ছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে নির্বাচন কমিশনকে আরো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। আমাদের নির্বাচন কমিশন অনেক ক্ষমতা রাখে। নির্বাচনের সময় প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। কাজেই তারা যদি ক্ষমতা প্রয়োগ না করে তাহলে আমরা তো সে ক্ষেত্রে কিছু করতে পারি না।’
এ সময় মন্ত্রী সামনের নির্বাচনগুলোতে যাতে প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনা শূন্যের কোটায় আসে সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে একটি সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশা সবাই করে। আমরাও এটাই চাই। সংঘাতহীন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন যে সহযোগিতাই চায়, সরকার তা দিয়ে থাকে। আশা করছি সামনের নির্বাচনগুলো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে কোনো ভুল রয়েছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো আগে জেলা প্রশাসন অনুষ্ঠান করত। এটা এখন নির্বাচন কমিশনের হাতে দেওয়া হয়েছে। এখন এ বিষয়টি আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখার সময় এসেছে। চিন্তাভাবনা করেই দেখতে হবে আমাদের পদ্ধতির পরিবর্তনে ভুল রয়েছে কি না। তবে এ নিয়ে আগাম কিছু বলতে পারছি না।’