বাঁশখালীর ঘটনায় গণশুনানি চায় বিএনপি
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে চারজন নিহতের ঘটনায় গণশুনানির দাবি জানিয়েছে বিএনপি। পাশাপাশি দলটির পক্ষ থেকে এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করা হয়েছে।
আজ শনিবার বাঁশখালীর গণ্ডামারা এলাকা পরিদর্শন করেন বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। এ সময় তাঁরা এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহমর্মিতা জানান।
পরে এলাকাবাসীর উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গণশুনানির দাবি জানান আবদুল্লাহ আল নোমান।
এদিকে একই দিন বাঁশখালীর ঘটনার প্রকৃত কারণ তদন্ত শেষে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভবন উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গণ্ডামারা গ্রামে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চীনের অর্থায়নে এস আলম গ্রুপের মালিকানায় একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। গত ৪ এপ্রিল এ প্রকল্পের বিরোধিতা করে এলাকাবাসীর সমাবেশে হামলার ঘটনায় চারজন নিহত ও অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে সাড়ে ছয় হাজারের অধিক মানুষকে।
গণ্ডামারা ভিটামাটি রক্ষা কমিটি এ ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। আজ বিকেলে এক সমাবেশ থেকে ১৫ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন সংগঠনের আহ্বায়ক লিয়াকত আলী।
বাঁশখালীতে পাখির মতো গুলি করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে এলাকার হাজার হাজার মানুষ এখানে অপেক্ষা করছে। তারা এ ঘটনায় একটা গণশুনানি চায়। গণশুনানির মাধ্যমে জনগণ বলে দেবে কে দোষী আর কে দোষী না।’
অপরদিকে বোয়ালখালীতে নবনির্মিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভবন উদ্বোধন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাঁশখালীতে যে একটি অত্যাধুনিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে যাচ্ছিল, এটা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এটা পক্ষেও বলছে, বিপক্ষেও বলছে। এই গোলাগুলিটা কে করেছে, কার মাধ্যমে কার ইঙ্গিতে কার প্ররোচনায় হয়েছে, কার কী স্বার্থ ছিল, আমি মনে করি এগুলো তদন্তের আগে বলা উচিত নয়। তদন্ত শেষ হোক, আমরা সবকিছুই আপনাদের জানাব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আইন তার নিজস্ব গতিতে চলে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। যেই এখানে কন্সপেরিসি করুক, যে-ই প্ররোচনা দিক কিংবা যে-ই এর পেছনে থেকে পানি ঘোলা করার অপচেষ্টা করুক আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তারা এটা সঠিকভাবে চিহ্নিত করবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা আমরা অবশ্যই নেব।’