নাজিম হত্যা : উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা
আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্র নাজিমুদ্দিন সামাদের হত্যাকারীদের চিহ্ণিত করে গ্রেপ্তার না করা হলে উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করা হবে।
আজ রোববার নাজিম হত্যার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালন শেষে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
হত্যার তিন দিন পার হয়ে গেলেও খুনিদের কেউ চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সকাল ৮টা থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এর পর শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
অবশ্য পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা কয়েকটি ভবনের ফটকের তালা ভেঙে ফেলেন।
দুপুরে ধর্মঘট-পরবর্তী এক সভা থেকে সামাদ হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে গ্রেপ্তার করা না গেলে বুধবার উপাচার্য ভবন ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
সভায় আন্দোলনের সমন্বয়কারী ও অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রুহুল আমিন বলেন, ‘নাজিম হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো তৎপরতা কারো চোখে পড়ছে না। আমরা দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আটক ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যেই সরকারকে নাজিম হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে খুনিরা আটক না হলে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে আগামী বুধবার উপাচার্য ভবন ঘেরাও করব।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জবি শাখার সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম অনিক বলেন, ‘জগন্নাথ শিক্ষার্থী নাজিম হত্যায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় ধর্মঘট পালন করেছেন। আমাদের সহপাঠী নাজিমুদ্দিন হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা যতক্ষণ পর্যন্ত আটক না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে এই হত্যার বিচারে আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ডাকে ধর্মঘট চলাকালে অধিকাংশ বিভাগে ক্লাস-পরীক্ষা হয়নি। তবে কিছু কিছু বিভাগে শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে সামাদ হত্যার প্রতিবাদ জানাতে শিক্ষার্থীরা যেন সড়ক অবরোধ করতে না পারে, সে জন্য ক্যাম্পাসে বিপুলসংখ্যক পুলিশ নিয়োজিত রয়েছে। কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান বলেন, ‘অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নিতে গত বৃহস্পতিবারই আমরা পুলিশের ওয়ারী জোনের ডিসিকে চিঠি দিয়েছি। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ সহযোগিতা চাওয়ায় সব ধরনের প্রশাসনিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা সামাদ হত্যাকাণ্ডটিকে অবশ্যই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছি।’