সুন্দরবনে আগুন : প্রকাশ্যে গুলি করা প্রয়োজন
পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যতটুকু ক্ষতি হয়েছে এতটুকুও হওয়া উচিত ছিল না। ক্ষতি যা হয়েছে তা অতিসামান্য।
আজ রোববার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
বনমন্ত্রী আরো বলেন, আগুনের বিষয়টি মিডিয়ায় অতি বেশি রঞ্জিত করে প্রকাশ ও প্রচার করা হয়েছে। তাতে মনে হয়েছে সুন্দরবনে এখন আগুন জ্বলছে, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। মূলত ততটা ক্ষতি হয়নি, মিডিয়া যতটা প্রচার করেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে পূর্ব সুন্দরবনে বন্ধ থাকা পাস পারমিট পুনরায় চালু করা হবে কি না তা পর্যালোচনার পর মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।
দুপুরে হেলিকপ্টারে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া বনভূমি পরিদর্শন শেষে শরণখোলা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সভায় বনজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের পথ খুঁজে বের করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণের প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী।
মতবিনিময় সভায় বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘সুন্দরবনে কে বা কারা কাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে আগুন দিয়েছে তা আমি, আমরা ও আপনারা সবাই জানেন। তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা দরকার।’ তিনি আরো বলেন, যারা সুন্দরবনে আগুন দিয়েছে তাদের প্রকাশ্যে গুলি করা প্রয়োজন। যেন এমন কাজ আগামীতে আর কেউ না করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী বলেন, সুন্দরবনের যেখানে বারবার আগুন লাগছে সে জায়গা লোকালয় থেকে বেশি দূরে নয়। সুন্দরবনের নলখাগড়া বনে জিয়ান মাছ পাওয়া যায়। এই জিয়ান মাছের ওপর আধিপত্য বিস্তার করার জন্য দুর্বৃত্তরা এই অগ্নিকাণ্ডের মতো কাজগুলো করে থাকে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ঐতিহাসিক এ কাজগুলো করে আসছে যারা, তাদের আপনারা সবাই চেনেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকার দলীয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এসব দুর্বৃত্তদের কোনো ধরনের ছাড় দেবেন না। এসব দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় এনে বিচার না করা পর্যন্ত সুন্দরবনে পুনরায় পাস পারমিট দেওয়া হবে কি না তা চিন্তা ভাবনা করে দেখা হবে।
বর্তমানে পূর্ব সুন্দরবনে পাস পারমিট বন্ধ থাকার বিষয়ে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতুল কুমার মণ্ডল বলেন, পাস পারমিট বন্ধ থাকায় এরই মধ্যে অনেক লোকই বেকার হয়ে পড়েছে। তাদের জীবিকার স্বার্থে পাস দেওয়ার বিষয়ে তিনি বনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি আরো বলেন, যারা প্রকৃত জেলে-বাওয়ালি তারা সুন্দরবনের ক্ষতি করে না। ক্ষতি করে একধরনের লোভী দুর্বৃত্তরা।
সুন্দরবনের অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন ও মতবিনিময় সভায় মন্ত্রীর সঙ্গে বাগেরহাট-৪ আসনের এমপি ডা. মোজাম্মেল হোসেন, প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী, খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. জহির উদ্দিন আহমেদ, পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলামসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।