আইনের শাসন না থাকলে বিনিয়োগ আসবে না
দেশে যদি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে বিদেশের কোনো বিনিয়োগ আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে প্রয়াত আইনজীবী শামসুল হক চৌধুরীর স্মরণসভায় প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রকৃতপক্ষে ভালো আইনজীবী দরকার। ভালো আইনজীবী হতে হলে ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দরকার। এখন ভারতে বেস্ট স্টুন্ডেন্টরা ল-তে অ্যাডমিশন নেয়। আমেরিকাতে হচ্ছে, জাপানে হচ্ছে। আমাদের এখানে রিসেন্টলি ডেভেলপ করেছে—ঢাকা ইউনিভার্সিটি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি, চিটাগং ইউনিভার্সিটি ভালো ছেলেমেয়ে বের করছে। কিন্তু যেসব প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি আছে, সেগুলোর মান একেবারে নিম্ন পর্যায়ের।’
‘ভারতের ইউনিভার্সিটিগুলোর ল সিলেবাসগুলো কিন্তু বার কাউন্সিল করে দিচ্ছে। আমাদের দেশের ল ইউনিভার্সিটিগুলো ইচ্ছামতো সিলেবাস করে, কোনো স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেন করে না। ভালো আইনজীবী হতে হলে ভালো ল কলেজ দরকার, ভালো সিলেবাস দরকার, ভালো শিক্ষক দরকার।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আইনের শাসন রুল অব ল, ইনডিপেনডেন্ট অব জুডিশিয়ারি—কোনোটাই বাস্তবায়ন হবে না যদি স্ট্রং বার (আইনজীবী সমিতি) না থাকে। স্ট্রং বার না থাকলে ভালো বিচারকও হবে না। কারণ হলো, সুপ্রিম কোর্টের বেশির ভাগ বার থেকে বিচারক হয়। দেশের যে অর্থনৈতিক অগ্রগতি হচ্ছে, দেশে যদি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে বিদেশের কোনো বিনিয়োগ এখানে আসবে না।’
বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, ‘যে বিদেশ থেকে এখানে আসবে বিনিয়োগ করতে, প্রথমেই দেখবে এ দেশে আইনের শাসন কী রকম। এই দেশে আমি যে টাকা বিনিয়োগ করব, এটা তুলে নিতে নিশ্চয়তা আছে কি না। এ দেশে যে মামলাগুলো আছে, সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে কি না। কারণ আমি যদি মামলায় পড়ে যাই, আমার টাকাটা আটকে যাবে কি না। এইটা যদি আমরা চিন্তাভাবনা করি, তাহলে আমাদের চিন্তা করতে হবে এ বিচার ব্যবস্থা আমি যে উদ্যোগ নিচ্ছি আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনোমতেই এ বিচার ব্যবস্থা উন্নত করা যাবে না।’
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ড. কামাল হোসেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন প্রমুখ বক্তব্য দেন।