দক্ষিণে কে কোন প্রতীক পেলেন
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দক্ষিণে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাঈদ খোকন ‘ইলিশ মাছ’ ও বিএনপি সমর্থিত মির্জা আব্বাস ‘মগ’ প্রতীক পেয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির সমর্থিত মো. সাইফুদ্দিন মিলন পেয়েছেন ‘সোফা’ প্রতীক। দক্ষিণে ২০ জন মেয়র পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কার্যালয়ে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া চলছে। ডিসিসি দক্ষিণের প্রতীক দেওয়া হচ্ছে গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে। এ ছাড়া ঢাকা উত্তরে নির্বাচনের প্রতীক দেওয়া হচ্ছে আগারগাঁওয়ের জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে। রিটার্নিং কর্মকর্তারা বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতীক বরাদ্দ দেবেন বলে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান। কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ চলছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘আমার প্রয়াত পিতা মোহাম্মদ হানিফ মাছ মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। সেই স্মৃতি এবং আবেগ থেকে আমি ইলিশ মাছ প্রতীক নিয়েছি। আমি আশা করছি, তাঁর সন্তান হিসেবে আমাকেও তাঁর ইলিশ মাছে ভোট দিয়ে, ভালোবাসা দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার শেষে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) দক্ষিণে মেয়র পদে ২০ জন, সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৮৬ জন ও নারী ওয়ার্ডে ৯৫ জনসহ ঢাকা দক্ষিণে মোট ৫০১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ঢাকা দক্ষিণে প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক
আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মো. সাঈদ খোকন ‘ইলিশ মাছ’, আবু নাছের মুহাম্মদ মাসুদ হোসাইন ‘চরকা’, এ এস এম আকরাম ‘ক্রিকেট ব্যাট’, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আয়ুব হুসেন ‘ঈগল’, বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম আসাদুজ্জামান রিপন ‘কমলালেবু’, দিলীপ ভদ্র ‘হাতি’, সিপিবি-বাসদের প্রার্থী বজলুর রশীদ ফিরোজ ‘টেবিল’, মশিউর রহমান ‘চিতাবাঘ’, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মির্জা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ ‘মগ’, মো. আকতারুজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ ‘লাউ’, মো. আবদুর রহমান ‘ফ্লাস্ক’, মো. আবদুল খালেক ‘কেক’, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মো. গোলাম মাওলা রনি ‘আংটি’, মো. জাহিদুর রহমান ‘ল্যাপটপ’, মো. বাহরানে সুলতান বাহার ‘শার্ট’, মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ‘টেবিল ঘড়ি’, জাসদের মো. শহীদুল ইসলাম ‘বাস’, মোহাম্মদ শফি উল্লাহ চৌধুরী ‘ময়ূর’, জাতীয় পার্টি (জাপা) সমর্থিত মো. সাইফুদ্দিন মিলন ‘সোফা’ ও শাহীন খান ‘জাহাজ’ প্রতীক পেয়েছেন।
এ ক্ষেত্রে প্রার্থীদের পছন্দকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। তবে একই প্রতীক যদি একাধিক প্রার্থী দাবি করেন, সে ক্ষেত্রে রিটার্নিং কর্মকর্তা লটারির মাধ্যমে কিংবা সমঝোতার ভিত্তিতে প্রতীক দিচ্ছেন।
এদিকে, ইসি সংরক্ষিত প্রতীকের চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীসংখ্যা বেশি হওয়ায় এবার অতিরিক্ত ৩০টি প্রতীক থেকে বরাদ্দ দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। কেননা, মেয়র পদে ইসির প্রতীক হচ্ছে ১২টি। কিন্তু ডিসিসি উত্তরে প্রার্থীসংখ্যা ১৬ জন এবং দক্ষিণে ২০ জন।
অন্যদিকে, সাধারণ কাউন্সিলরদের সংখ্যাও ইসির সংরক্ষিত প্রতীকের সংখ্যার চেয়ে বেশি। যে কারণে কাউন্সিলর পদেও অতিরিক্ত প্রতীক থেকে বরাদ্দ দিতে হবে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালা অনুসারে তিনটি পদের জন্য ৩৪টি প্রতীক সংরক্ষণ করেছে ইসি। এর মধ্যে মেয়র পদে ১২টি, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২টি এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের জন্য ১০টি প্রতীক ছিল।
ইসির সংরক্ষিত প্রতীক
মেয়র পদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি প্রতীক হলো—টেবিল ঘড়ি, টেলিস্কোপ, ডিশ অ্যান্টেনা, কমলালেবু, ক্রিকেট ব্যাট, চরকা, দিয়াশলাই, ফ্লাস্ক, বাস, ময়ূর, হাতি ও ইলিশ মাছ।
সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদের জন্য ১০টি প্রতীক হলো—পিঞ্জর, টিস্যু বক্স, বয়াম, কেতলি, গ্লাস, পানপাতা, মুলা, মোড়া, শিলপাটা ও স্টিলের আলমারি।
সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য সংরক্ষিত ১২টি প্রতীক হলো—মিষ্টিকুমড়া, এয়ারকন্ডিশনার, করাত, ঘুড়ি, টিফিন ক্যারিয়ার, কাঁটা চামচ, ট্রাক্টর, ঠেলাগাড়ি, রেডিও, ঝুড়ি, ব্যাডমিন্টন র্যাকেট ও লাটিম।
অতিরিক্ত প্রতীক
প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় ৩০ অতিরিক্ত প্রতীকের মধ্যে মেয়র পদের জন্য ১২টি প্রতীক রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে—টেবিল, মগ, লাউ, ল্যাপটপ, আংটি, ঈগল, কলমদানি, কেক, চিতাবাঘ, জাহাজ, শার্ট ও সোফা।
সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের আটটি প্রতীকের মধ্যে রয়েছে—প্রেশারকুকার, ফ্রাইপ্যান, বাঁশি, ঝুমঝুমি, টিয়া পাখি, দোলনা, ভ্যানিটি ব্যাগ ও হারমোনিয়াম।
সাধারণ কাউন্সিলর পদের জন্য ১০টি প্রতীকের মধ্যে রয়েছে—ঘোড়া, ভায়োলিন, ড্রেসিং টেবিল, ক্যাপ, ক্রিসমাস ট্রি, প্রদীপ, সূর্যমুখী, স্ট্রবেরি, হেডফোন ও হেলিকপ্টার।
আগামী ২৮ এপ্রিল তিন সিটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করবে নির্বাচন কমিশন।