কামারুজ্জামানের রায় কার্যকরের প্রস্তুতি চলছে : স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাওয়ায় তাঁর রায় বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। আজ শুক্রবার রাতে তিনি এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাত সাড়ে ৮টায় এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘কামারুজ্জামান প্রাণভিক্ষা চাননি। ফলে আমরা উচ্চ আদালতের রায় কার্যকরের প্রক্রিয়া চালাচ্ছি।’
অবশ্য এর আগেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
এদিক রাত ৮টার দিকে রাজধানীর লালবাগ জোনের উপকমিশনার মোহাম্মদ মফিজ উদ্দিন আহমেদ কারাগারে প্রবেশ করেন। এ সময় একজন চিকিৎসককেও কারাগারে ঢুকতে দেখেন সেখানে অপেক্ষমাণ গণমাধ্যমকর্মীরা। সাড়ে ৭টার দিকে একটি ট্রলিতে করে কারাগারে বাঁশ নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এর আগে কারাগারে ঢোকেন সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী।
এর আগে আজ সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে প্রবেশ করেন জ্যেষ্ঠ ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল ও তানভীর আজিম। বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তাঁরা কারাগার থেকে বের হয়ে জিপ গাড়িতে উঠে চলে যান।
তারপরই স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি (কামারুজ্জামান) কিছুটা সময় চেয়েছেন। তবে তাঁকে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়েছে।
কারাগারের একটি সূত্র জানায়, জেল সুপার ও দুজন ম্যাজিস্ট্রেট কামারুজ্জামানের কাছে তাঁর মতামত জানতে চান। তবে তিনি ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে কী জানিয়েছেন, তা জানা যায়নি।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এর পর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়।
সর্বশেষ গত ৫ এপ্রিল আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়। কিন্তু তা খারিজ করে দেন আদালত।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।