গোটা ক্যাম্পাসে প্রদীপ জ্বালিয়ে লিপু হত্যার বিচার দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মোতালেব হোসেন লিপু হত্যার বিচার দাবিতে ক্যম্পাসের ১৭টি আবাসিক হলে একযোগে প্রদীপ প্রজ্বালন করেছে শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় এ কর্মসূচি পালিত হয়।
প্রদীপ প্রজ্বালন শেষে সব হলেই এক মিনিট করে নীরবতা পালন করা হয়। পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
এ সময় নবাব আব্দুল লতিফ হলের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান সুমন বলেন, আমাদের মা-বাবা টিভিতে সংবাদ দেখলেই আতকে ওঠেন। এই না জানি তাঁর সন্তানের কিছু হলো। এই রাবিতে হত্যার-সংস্কৃতি চালু হয়েছে। আজকে আমরা যে মোমবাতি প্রজ্বালন করছি, সেটা শুধু লিপু হত্যার বিচারের দাবিতে নয়। রাবিতে যে হত্যার-সংস্কৃতি চালু হয়েছে তার বিরুদ্ধে এই প্রদীপ প্রজ্বালন।
শের-ই-বাংলা হলের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হচ্ছে। যার কারণে আমরা কোনো বড় ধরনের প্রতিবাদে যেতে পারছি না। দ্বিতীয়ত, বিভাগ সাতদিনের আলটিমেটাম দিয়ে থেমে গেছে। কিন্তু আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা থেমে নেই। আমরা এই প্রদীপ প্রজ্বালন করে লিপু হত্যার আন্দোলনকে ধারণ করছি। সবার মধ্যে আমরা অহিংস উপায়ে লিপু হত্যার বিচারের দাবি জানাচ্ছি। প্রশাসন যদি এর মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমরা জোড়ালো আন্দোলনে যাব।’
‘লিপু হত্যার বিচার চাই। আর এই বিচারের প্রক্রিয়া যেন থেমে না যায়, তাই আমরা সাধারণ শিক্ষার্থী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। যাতে প্রশাসনের টনক কিছুটা হলেও নড়ে। আর লিপু হত্যার বিচারকে তড়ান্বিত করে’, বলেন মুন্নুজান হলের শিক্ষার্থী সাবিনা।
এর আগে আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা লিপু হত্যার বিচারের দাবিতে টি-শার্ট পরে। টি-শার্টের সম্মুখভাগে লেখা ‘লিপু হত্যার বিচার চাই’। আর পেছনে লাল রঙে মাঝে লিপুর মুখ, তার নিচে লেখা ‘এরপর কে?’। এই টি-শার্ট পরে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাস্তা একসঙ্গে প্রদক্ষিণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় ভর্তিচ্ছুরা যাতে কোনোভাবে আতঙ্কিত হয়ে না পড়ে সেজন্য শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
গত ২০ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নবাব আব্দুল লতিফ হল থেকে লিপুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন সন্ধ্যায় লিপুর চাচা মো. বশীর বাদী হয়ে নগরীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা করেন।
এ ঘটনায় আজ লিপুর রুমমেট মনিরুল ইসলামের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।