ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ ছাত্র বহিষ্কার
টাঙ্গাইল মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ৯ ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসাথে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও আবাসিক হল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের রবিউল হাসান সাজু, বিএসআরএম বিভাগের প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের ওমর ফারুক, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের ওমর ফারুক, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের আশিকুর রহমান, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের মোহাইমিনুল কাইয়ুম, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের আহাদ খান, আইসিটি বিভাগের প্রথম বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের বাবু কিশোর দে, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের মনিরুল ইসলাম, সিএসপি বিভাগের চতুর্থ বর্ষ ও দ্বিতীয় সেমিস্টারের সাইদুর রহমান।
এর আগে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সকাল ১০টার মধ্যে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যায়। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করতে পারেনি পুলিশ।
বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের এক জরুরি সভা ঢাকা লিয়াঁজো অফিসে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ড ও পিএসপি সদস্য এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. শরীফ এনামুল কবীরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন অধ্যাপক ড. আমির হোসেন খান, অধ্যাপক এ কে এম সাইদুল হক চৌধুরী, অধ্যাপক হাবিবুর রহমান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খাদিমুল ইসলাম।
এ ছাড়া শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় পুলিশ ও নিহত ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা সামছুল আলম শিবলী এনটিভি অনলাইনকে জানান।
এদিকে নিহত খালেদ মোশারফের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর মামাতো ভাই আব্দুল লতিফের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে লাশ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলার মুজাপট্টির গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
গতকাল বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত আবু সাদাত খালেদ মোশাররফের (২৪) মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অন্য দুই ছাত্রকে ঢাকায় জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজনীতিমুক্ত ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি না থাকলেও নিহত খালেদ মোশাররফ নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি পরিচয় দিতেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশবিজ্ঞান বিভাগের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মুজাপট্টি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামের ছেলে।