শান্তি সমাবেশে যা বললেন আ. লীগ নেতারা
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটের সামনে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ওনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার (১২ জুলাই) বিকেল তিনটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও তার আগেই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে আওয়ামীলীগ নেতারা যা বলেছেন তা এনটিভি অনলাইনের পাঠকদের উদ্দেশে তুলে ধরা হল-
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘দেশের মানুষ উন্নত বাংলাদেশ দেখুক এটা ওদের সহ্য হয় না। কারণ ওদের সৃষ্টিই হয়েছিল বাংলাদেশকে জঙ্গিরাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। এজন্য ওরা নির্বাচন বর্জন করবে। নানক বলেন, ‘ওই হত্যাকারীর দল, ওই ঘাতকেরা আবারও নেমেছে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচালের জন্য। যে হাত আগুন দেবে, সে হাত ভেঙে দেব৷ এই জবাব দেওয়ার জন্য আজকের এই শান্তি সমাবেশ।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘ওরা গণতন্ত্রের কথা বলে, এটা হলো ভুতের মুখে রামনাম।’
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, ‘বিদেশিরা বিএনপির প্ররোচণায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যেভাবে কথা বলছে, আমি তাদেরকে বলব, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলবেন না।’ বিএনপিকে 'রাজনৈতিক অপশক্তি' আখ্যা দিয়ে তাদের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করা হবে বলে জানান কামরুল ইসলাম।
তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির সমাবেশের উদ্দেশ্য দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করা। তারা প্রায় সময় এক দফা ঘোষণা করে। বিএনপি ২০১৩ সালে, ১৫ সালে এবং ১৯ সালেও এক দফা ঘোষণা করেছে । কিন্তু তাদের এক দফা কখনোই সফল হয়নি। সব সময়ই মাঠে মারা যায়, এবারও যাবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আসা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই বিএনপি সমাবেশের ডাক দিয়েছে। আজকের এই সমাবেশ এমন একটা সময়ে হচ্ছে, যখন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। তখন বিএনপি-জামায়াত নতুন করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। তারা আজ সমাবেশ ও শোডাউন করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের দেশে ইইউয়ের প্রতিনিধিরা এসেছেন। তাদের দেখিয়ে বিএনপি শোডাউন করতে চায়। আজ বিএনপির সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। বিদেশিরাই তাদের ভরসা। ষড়যন্ত্র আর বিষোদ্গার করে তারা ক্ষমতায় যেতে চায়।’ হানিফ আরও বলেন, ‘আমরা কোনো বিদেশির কাছে ধরনা দেব না। আমরা জনগণের কাছে তুলে ধরব যে, আপনারা (বিএনপি) যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন তখন কী করেছিলেন আর আমরা এখন কী করেছি।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, ‘বিএনপি অতীতের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে এখন এক দফার ঘোষণা দিচ্ছে। এদের প্রতিহত করার জন্য আওয়ামী লীগের সারাদেশের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত। আমরা আাগামী দিনে শেখ হাসিনাকে আবারও জয়যুক্ত করব, ইনশাআল্লাহ।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপির সমাবেশ ফাঁকা হয়ে গেছে। বিএনপি কয় একদফা, আমরা এই সমাবেশ থেকে ওদের ‘নেই দফা’ বানিয়ে দিলাম। বিএনপি আজকেই হেরে গেছে ।’
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, 'বিএনপির এক দফা হচ্ছে মানুষ পোড়ানোর এক দফা, নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা।'
বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, 'আমরা যখন শান্তি সমাবেশ করছি সেখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে দেশ বিরোধী শক্তি তথাকথিত এক দফা দাবিতে সমাবেশ করছে। আজকে বিএনপি ক্ষমতা দখলের মোহে এতটাই বিভোর যে তারা সংবিধান মানে না, গণতন্ত্র মানে না, নির্বাচন মানে না। তারা হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করে ক্ষমতায় আসতে চায়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘আগামী জানুয়ারি মাসে দেখিয়ে দেব সুষ্ঠু নির্বাচন কাকে বলে কত প্রকার ও কী কী।’
শেখ ফজলে নূর তাপস আরও বলেছেন, ‘আজ থেকে ঢাকা দখলে রাখা হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরে যাবো।’ এছাড়া, নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এসব ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগকে রুখতে পারবে না।’
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নয়নের যেমন বিকল্প নেই, তেমনি উন্নয়নের জন্য নৌকা ও আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও নৌকাকে জয়যুক্ত করতে হবে।’
সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকেই আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ ঢাকার আশপাশের এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমাবেশে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। অনেক নেতাকর্মীকে বায়তুল মোকাররম মসজিদ গেটের নিচে অবস্থান করতে দেখা যায়।