মুশতাককে হাইকোর্ট, ‘আপনি নৈতিকভাবে কাজটি ঠিক করেননি’
ছাত্রীকে বিয়ে করা রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদকে উদ্দেশ্যে করে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আপনি নৈতিকভাবে কাজটি ঠিক করেননি।’ আজ বুধবার (১৬ আগস্ট) বিচারপতি আবু তাহের সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পাশাপাশি মুশতাকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় আগাম জামিন আবেদন ফেরত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মুশতাকের পক্ষে জামিন আবেদনটি করেন তার আইনজীবী সোহরাব হোসেন পলাশ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমেদ ভূঁইয়া।
আদালতে আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে আদালত মুশতাককে ডায়াসের সামনে ডেকে বলেন, ‘আপনি নৈতিকভাবে কাজটি ঠিক করেননি। এই জামিন আবেদন আমরা শুনবো না।’ জামিন আবেদনটি তখনই আদালত ফেরত দেন।
গত ১ আগস্ট কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও ধর্ষণের অভিযোগে মুশতাককে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার অন্য আসামি হলেন ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদী। ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে এ মামলার আবেদন করা হয়। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজখবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করেন এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী এ রকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। অধ্যক্ষ ব্যবস্থা করছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভুক্তভোগীকেও ক্লাস থেকে নিয়ে আসেন। পরে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী ২ নম্বর আসামির (অধ্যক্ষ) কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি, বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন ভুক্তভোগীকে ঠাকুরগাঁওয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছে এবং যৌন নিপীড়ন করেছে।