বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য যারা মায়াকান্না করছে, তাদের রাজনীতি হচ্ছে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের মদদে (সপরিবারে বঙ্গবন্ধু) হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্টে তার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা হয়েছে। তাদের টার্গেট বঙ্গবন্ধু পরিবার ও আওয়ামী লীগ।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) সকালে ২০০৪ সালের ওই গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমানের ১৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের মাধ্যমে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছে জিয়া পরিবার। তাদের টার্গেট বঙ্গবন্ধু পরিবার ও আওয়ামী লীগ। ১৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের মদদে হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। ২১ আগস্ট তার ছেলে তারেক রহমানের নির্দেশে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা হয়েছে। আজ গণতন্ত্রের জন্য যারা মায়াকান্না করে, তাদের রাজনীতি হচ্ছে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশবাসীর কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, এই হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সঙ্গে যারা জড়িত, যারা আজ গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না করছে, তাদের সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তির সহাবস্থানের কোনো সুযোগ আছে কি না?’
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একুশে আগস্টের হত্যাকাণ্ড একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। বাংলাদেশে ৭৫ থেকে শুরু হয় হত্যাকাণ্ড, ষড়যন্ত্রের রাজনীতির ধারাবাহিকতা। হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি মূল টার্গেট বঙ্গবন্ধু পরিবার এবং আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করা, বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করা, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, একই সুতোয় গাঁথা। হরকাতুল জিহাদ ও কিলিং এজেন্টদের কাছে তারেক রহমানের পরিষ্কার নির্দেশ ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যা করা। সেদিনের প্রাইম টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা।’
বিএনপির চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এদেশে আন্দোলনের বস্তুগত কোনো পরিস্থিতি বিরাজমান নেই। আন্দোলনের জন্য দুটি বিষয় লাগে। একটা অবজেক্টিভ, আরেকটা সাবজেক্টিক। তাদের (বিএনপি) অবজেক্টিভ কন্ডিশনও নেই, সাবজেক্টিভ প্রিপারেশনও নেই। তাদের আন্দোলনের নেতারা হতাশ। ক্ষমতায় আসার মুলা ঝুলিয়ে নেতাকর্মীদের জড়ো করেছিল। তাদের এসব সমাবেশে জনগণের সম্মেলন ঘটেনি, অংশগ্রহণ ঘটেনি। জনগণ ছাড়া গণ-আন্দোলন কেমন করে হবে? জনগণ ছিল না, ছিল নেতাকর্মীদের আন্দোলন। তাই তাদের আন্দোলনে সুনামি তৈরি হবে না, সেটাই স্বাভাবিক।’
এর আগে সকালে বনানী কবরস্থানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্ব প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। পরে দলের পক্ষ থেকে আইভি রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর আইভি রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এছাড়া আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনও আইভী রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে গ্রেনেড হামলা ও গুলি চালানো হয়। এই হামলায় আইভী রহমান গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।